এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তা রেলসেতুর স্লিপারে লোহার পাতের পরিবর্তে বাঁশ

মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা সেতুর স্লিপার ধরে রাখতে লোহার পাতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ। ছবি : কালবেলা
মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা সেতুর স্লিপার ধরে রাখতে লোহার পাতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ। ছবি : কালবেলা

মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা সেতুর স্লিপার ধরে রাখতে লোহার পাতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ। সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণের ৮৫ বছর পেরিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বেশ কিছু স্লিপার। খুলে পড়েছে অনেক স্লিপারের প্লেট ও নাট-বল্টু। সেতুটি দিয়ে ট্রেন চলাচলের সময় প্রচন্ড ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। জানা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলায় সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য তিস্তা নদীর উপর নির্মিত হয় তিস্তা রেল সেতু। নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৮৩৪ সালে ২ হাজার ১ শত ১০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণ করে। ১৮৩৪ সালে নির্মিত সেতুটির মেয়াদ ওই সময় ধরা হয়েছিল ১ শত বছর। বর্তমানে যার বয়স চলেছে ১ শত ৮৬বছর। স্লিপার ধরে রাখতে লোহার পাত এর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ। মাঝে মধ্যে ফাটল দেখা দিলে তা ঝালাই দিয়ে মেরামত করে চালানো হচ্ছে ট্রেন।

লালমনিরহাট জেলার তিস্তা এলাকায় ১৮৩৪ সালে নির্মিত হয় বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম এই তিস্তা রেলসেতু। নির্মাণের সময় থেকে সেতুটির বয়স ধরা হয়েছিল ১০০ বছর, কিন্তু বর্তমানে সেতুটির বয়স ১৮৯বছর। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন ১৮টি ট্রেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলা থেকে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এ সেতুর ওপর দিয়ে পার হচ্ছে কয়েক হাজার যাত্রী। মেয়াদ উত্তীর্ণ সেতুটির বেশ কিছু স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে, খুলে পড়েছে অনেক স্লিপারের প্লেট ও নাট-বল্টু। পাশাপাশি স্লিপার ধরে রাখতে লোহার পাত ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও বাঁশ ব্যবহার করে করা হয়েছে দায়সারা কাজ। মাঝে মধ্যে ফাটল ঝালাই দিয়ে মেরামত করা হয়। দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকা সেতুটিতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। মেয়াদ উত্তীর্ণ সেতুটির পাশে আর একটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়নে নেই কোনো উদ্যোগ।

তিস্তা পাড়ের আলিমুদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, সেতুর উপর ট্রেন উঠলে ঝাঁকি দিয়ে উঠে। ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে। প্রতিদিন অনেক ট্রেন চলাচল করে এই সেতু দিয়ে অথচ এটির বিষয়ে কোন গুরুত্ব নেই রেল কর্তৃপক্ষের। তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

একই এলাকার কলেজ ছাত্র নুর ইসলাম বলেন, উত্তরের দুই জেলার রেলযোগাযোগের একমাত্র ভরসা তিস্তা রেল সেতু। এটি বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে। সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হতে পারে রেল যোগাযোগ।

তবে তিস্তা রেল সেতুটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং লোহার পাতের পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহারকে স্বাভাবিক দাবি করে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, সেতুর উপর ভারি ট্রেন উঠলে একটু ঝাকি দিয়ে উঠবে এটা স্বাভাবিক। তবে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ নয়। সম্প্রতি সেতুটি আবারও সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমানে এ সেতু দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচল করতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ন্যায় ও আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে হবে : বাবর

ফিল্মফেয়ারে রেকর্ড গড়ল ‘লাপাতা লেডিস’

কলকাতায় অমিতাভের জন্মদিনে চল্লিশা পাঠ

বায়ুদূষণের শীর্ষ পাঁচে ঢাকা

বিএনপির ৩১ দফা দেশের মানুষকে বাঁচানোর রূপরেখা : রাশেদুল আহসান

আফগানিস্তানের ১৯ সীমান্তপোস্ট দখল করেছে পাকিস্তান

দল কমলেও বিপিএলে বাড়ছে ভেন্যু

লন্ডনে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখে যা বললেন রোজিনা

হঠাৎ কেন আফগান সীমান্তে হামলা চালাল পাকিস্তান

যুবদল নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার

১০

ইসরায়েলকে উড়িয়ে দিল নরওয়ে

১১

কারিনার রাগ সামলানোর উপায় জানালেন সাইফ

১২

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহছানুল হক

১৩

হলুদ রঙে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলেছে বন লবঙ্গ

১৪

ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনারস আয়োজনে ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেটিং ফেস্ট’ অনুষ্ঠিত

১৫

ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ

১৬

গোল করে, করিয়ে দলকে জেতালেন মেসি

১৭

জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর

১৮

বিএনপিতে সন্ত্রাসী-দুষ্কৃতকারীদের জায়গা নেই : বিজিএমইএ সভাপতি 

১৯

অনূর্ধ্ব-২০ ফিফা বিশ্বকাপ / বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

২০
X