রেশমা বেগম। বেসরকারি একটি ব্যাংকে কর্মরত। রূপসী নারী। সেই রূপ-লাবণ্যের ফাঁদে ফেলে প্রেম, বিয়ে, হানিমুন এবং প্রতারণাই যার নেশা আর পেশা। ফাঁদে ফেলে বিয়ের পর নানা অজুহাতে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা না দিলেই মামলা এবং তালাক যেন রেশমার নিত্যদিনের ঘটনা।
স্কুলজীবন থেকেই রেশমা এলাকায় সুপরিচিত সুন্দরী হিসেবে। স্কুল থেকেই এলাকায় তার প্রেম-ভালোবাসার আলোড়ন। এরপর ঢাকায় আসা। ঢাকায় এসেও সেই পথেই হাঁটা শুরু তার। সুন্দরী রেশমার টার্গেট টাকাঅলা কিংবা প্রবাসী ব্যক্তি।
প্রথমে চোখাচুখি, মাখামাখি। তারপর প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করে দিয়ে কেটে পড়া অথবা ওই প্রেমিকের নামে বদনাম ছড়িয়ে হেনস্তা করাই ছিল রেশমার কাজ। এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে রেশমার দুটি তালাকনামার কপি। যার একটি রেশমা দিয়েছেন প্রবাসী মুনসুর নামের এক যুবককে। অন্যটি আরেক প্রবাসী স্বামী আবুল কাশেম দিয়েছেন রেশমাকে।
আবুল কাশেমের স্বজনরা জানান, রেশমা তাদের সঙ্গে অনেক প্রতারণা করেছেন। না বুঝে তার সঙ্গে তাদের ছেলের বিয়ে দিয়ে তার জীবন নষ্ট করেছেন তারা। এ ছাড়া রেশমা তাদের কাছ থেকে অনেক টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ।
রেশমার বাড়ি ভোলার মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের শ্রীমতি গ্রামে। জানা যায়, ২০১১ সালে রেশমা প্রবাসী মুনসুরকে বিয়ে করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ২০১৬ সালে তালাক দেন। আরেক প্রবাসী স্বামী আবুল কাশেমের টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় পর উল্টো তার বিরুদ্ধে মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল ও সাইবার ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা করে। আদালত মামলাটি তদন্ত করতে দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। তবে দুটি মামলার কোনো সত্যতা নেই বলে আদালতে রিপোর্ট দেয় পিবিআই।
কাগজে-কলমে দুটি বিয়ের সন্ধান পেলেও রেশমার পরকীয়া প্রেমের ঝুলি বেশ ভারী। রেশমার দ্বিতীয় স্বামী আবুল কাশেম জানান, বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রীর আগে আরও দুটি বিয়ে হয়েছিল। আর তার সঙ্গে বিয়ের পর ছিল একাধিক পরকীয়া।
আবুল কাশেমের পরিবার জানায়, নানাভাবে রেশমা তাদের হয়রানি করছেন। হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন মামলার।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় রেশমার সঙ্গে। রেশমা কালবেলাকে জানান, তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর সে আবারও তাকে নিতে চায়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান রেশমা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, তদন্তে প্রবাসী আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠিয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন