ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কোটার বিরুদ্ধে গণপদযাত্রা, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন। ছবি : কালবেলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন। ছবি : কালবেলা

সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণপদযাত্রা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে পদযাত্রা নিয়ে নীলক্ষেত, নিউমার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোড হয়ে শাহবাগে এসে তারা অবস্থান নেন। এ অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ফার্মগেট-শাহবাগ, শাহবাগ-পল্টন-মগবাজার রোড, শাহবাগ -সায়েন্সল্যাব রোড এবং শাহবাগ এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। অবশেষে বিকেল ৪টার দিকে সড়ক ছেড়ে দেন তারা।

এ সময় একই দাবিতে আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন আন্দোলনরকারীরা। তারা জানান, আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।

এ সময় তাদেরকে ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’;, ‘সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা’; ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’; ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনকারীদের দাবি- ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে (সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে), সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে ইত্যাদি।

কর্মসূচিতে অবস্থান নিয়ে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ এই কোটা পদ্ধতি সাধারণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি একটি অবিচার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাতিল হওয়ার পর গত ৫ জুন সেই কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, কোটার মাধ্যমে বৈষম্য এবারই প্রথম নয়। ১৯৮৭ সালে বলা হয়েছিলো কোটা ধীরে ধীরে উঠে যাবে। কিন্তু ১৯৯৭ সালেও আমরা দেখেছি কোটায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জায়গায় নাতি-নাতনিকেও যুক্ত করা হয়েছে। কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জঘন্য বৈষম্য আমরা দেখেছি। এ ধরনের ভয়ানক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের পরিপত্রটি পুনর্বহাল করতে হবে। এটিই আমাদের এক দফা দাবি।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ মন্ডল বলেন, দুঃখের বিষয় আজ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে। যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে এদেশ স্বাধীন করেছে, সেই স্বাধীন দেশে তাদের সন্তানদের কাছে আরমা বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্য আমরা কোনোভাবেই মেনে নেবো না। ২০১৮ সালের পরিপত্রটি পুনর্বহাল করেই এই আন্দোলন থামবে।

উল্লেখ্য, ঈদের আগে সর্বশেষ গত ৯ জুন হাইকোর্টের নতুন রায়ের প্রতিবাদে ও ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবিতে ঢাবি ক্যাম্পাসে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তারা এই রায়কে চেম্বার আদালতে স্থগিতের আবেদন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন। এরপর গত ১ জুলাই আবার রাজপথে নামেন শিক্ষার্থীরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্মার্ট লেনদেনে এক ধাপ এগিয়ে গুগল ওয়ালেট, কী পাচ্ছেন গ্রাহকরা?

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধিদল

বইয়ের সঙ্গে গাছ উপহার, জাতীয় পরিবেশ পদক পাচ্ছেন মাহমুদুল

মেলার স্টলে আ.লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন, নারী নেত্রী আটক

সেনাবাহিনীর অভিযান / সাবেক সিইসি নুরুল হুদার সঙ্গে মবকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তার ১

কোচিং থেকে বাড়ি ফেরা হলো না হৃদয়ের

ইতিহাসের ব্যয়বহুল ন্যাটো সম্মেলন : মিনিটে ব্যয় সোয়া ১৪ কোটি টাকা

২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে

ইরানের কতজন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত, জানাল ইসরায়েল

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স / রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ

১০

কলম্বোতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ফিরেছেন মিরাজ

১১

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হাওরে হাউসবোট দখলের অভিযোগ 

১২

বৃহস্পতিবার শুরু এইচএসসি, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

১৩

অতর্কিত হামলায় ইসরায়েলের ৭ সেনা নিহত

১৪

দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন ওএসডি

১৫

লাল ডিম না সাদা ডিম, কোনটির পুষ্টিগুণ বেশি

১৬

ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে দুটি সংবাদমাধ্যম, ট্রাম্পের ক্ষোভ

১৭

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন / বাঙ্কার বাস্টারেও ধ্বংস হয়নি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র

১৮

ইরানে ফের হামলার চেষ্টা, ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত

১৯

রাজশাহী মহানগরীর থানা-ওয়ার্ড যুবদলের কমিটি গঠনে সতর্ক চিঠি

২০
X