নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। শুক্রবার (৯ আগস্ট) সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৮ আগস্ট ২০২৪ নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল সমর্থক শিক্ষকরা স্বাগত, আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ছাত্র- শিক্ষক ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার দেশ ছেড়ে যাওয়ার ফলে দেশ যে সরকারবিহীন হয়ে পড়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তা পূরণ হওয়ায় আমরা আনন্দিত।
নেতারা বলেন, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাংলাদেশ এখন একটি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ সময়ে দায়িত্বভার গ্রহণকারী সরকারের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ আছে। বিগত ১৫ বছরে সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। কেবল ভোটের অধিকার নয়, মানুষের বাক-স্বাধীনতাও কেড়ে নিয়েছে। সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে চরম সংকটে ফেলে দিয়েছে। নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বারবার কারিকুলাম পরিবর্তন এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় নতুন সরকার প্রাধান্য নির্ধারণের মাধ্যমে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে এসব সমস্যা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া এ দেশের মানুষের পরম কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে এ দেশের মানুষ এজন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। এতে প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই। গুম হওয়া ছাড়াও স্বৈরশাসক দ্বারা নিপীড়ন-নির্যাতন ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সর্বশেষ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে গিয়ে গণঅভ্যুত্থানে শত শত ছাত্র-জনতা শাহাদাতবরণ করেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলনে সব শহীদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আমরা দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা আশা করি, শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ ও জনমানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সরকারকে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেওয়াসহ সীমাহীন সমস্যা ও সংকট মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। তবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে, এ সরকারের বিজ্ঞ সদস্যরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সফল হবেন। আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরকার সহযোগিতা করতে বদ্ধপরিকর।
মন্তব্য করুন