ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত রোববার মধ্যরাতে হলের ৫৪০ নম্বর কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রশাসন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কথা থাকলেও মূলত হল নিয়ন্ত্রণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৫৪০ নম্বর কক্ষ ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের। রোববার মধ্যরাতে ওই কক্ষের শিক্ষার্থীরা বাইরে গেলে তালা ভেঙে কক্ষ দখলের চেষ্টা চালায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীরা। এ সময় খবর পেয়ে সৈকতের অনুসারীরা ঘটনাস্থলে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে অন্তত তিনজন আহত হয়।
এ সময় পুরো হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তবে হল প্রশাসনের কাউকে এ সময় ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাফিন হাসান, সহসম্পাদক তামজিদ আরমিন মোবিন, মাসুদ শিকদার। আহতরা সবাই ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী।
আহতদের মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হলে ফিরলেও একজন ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকা, উপপ্রচার সম্পাদক সোহানুর রহমান, আইন সম্পাদক রাকিবুল হাসান শিশির, সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন। তারা সবাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী আবু বকর সিদ্দিক কালবেলাকে বলেন, ওই কক্ষটি শিশির ভাই নেতা হওয়ার সময় তার গ্রুপে ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি দেওয়ার পর শিশির ভাইয়ের গ্রুপটি দুভাগ হয়ে যায়। এখন এই কক্ষটি সৈকত ভাইয়ের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ওই কক্ষে জুনিয়র শিফট করতে চায় শিশির ভাইয়ের অনুসারীরা। গতকাল রাতে তালা ভেঙে কক্ষ দখল করতে চাইলে সৈকত ভাইয়ের অনুসারীরা বাধা দেয়। এ সময় তারা আমাদের মারধর করে। মারধরে আমাদের তিনজন আহত হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান শিশির কালবেলাকে বলেন, আমি ওই ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম না। হল প্রশাসন কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ওই কক্ষে সিট বরাদ্দ দিলে তারা ওই কক্ষে যেতে চাইলে কয়েকজন মারধর করেছে বলে শুনেছি। বাকি অভিযুক্তদের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত কালবেলাকে বলেন, এমন ঘটনা অহরহ হচ্ছে। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত। তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাসুদুর রহমান বলেন, হামলার বিষয়ে আমি ওইভাবে জানি না। আমার জানামতে, ছাত্রদের মধ্যে একটু উত্তেজনা হয়েছিল। তারা সেটি সমাধান করে নিয়েছে। তবে আমি খোঁজ নিব। কেউ কোনো অপরাধ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন