ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) হিজাব পরা নারী শিক্ষার্থীর ছবি নিয়ে অবমাননা ও কটূক্তির ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে অ্যাকশন ফর কমিউনিটি ট্রান্সফরমেশন (এক্ট)।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।
এক্টের প্রতিনিধি উম্মে সালমা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো, একটি নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। আমাদের বোন উম্মে সালমা, সাদিয়া আক্তার বর্ষা, মুনতাহা ঈশা ও নুসরাত জাহানের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ছবি নিয়ে বিভিন্ন নোংরা ক্যাপশন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। তাদের ব্যক্তিগত প্রোফাইলের কমেন্টে শতাধিক মন্তব্য এবং ইনবক্সে জীবননাশের হুমকি ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রাজনীতি বন্ধ চেয়ে যে আন্দোলন হয়, সে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার ফলেই তারা এই অবমাননাকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে রাজনৈতিক ক্ষমতাধর দল যেভাবে গণরুম, গেস্টরুম ও সিট বাণিজ্য করে, তার থেকে রক্ষার স্বপ্ন নিয়ে আমরা সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করি। কিন্তু এর ফলস্বরূপ আমরা অকথ্য ভাষায় অনলাইন বুলিং, মানসিক অত্যাচার এবং ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে হেনস্তার শিকার হয়েছি।’
উম্মে সালমা বলেন, ‘এটি শুধু একটি সাধারণ দুর্ব্যবহার নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি তীব্র আঘাত এবং নারীদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ। কেউ রাজনৈতিক সচেতন হলেই তাকে রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ট্যাগ দিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি কেবল ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর প্রতি অবিচার নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য একটি হুমকি, যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে।’
উম্মে সালমা আরও বলেন, ‘আমরা এ্যাকশন ফর কমিউনিটি ট্রান্সফরমেশন (এ্যাক্ট) প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থী এবং ইসলামিক ছাত্রী সংস্থার ছবি নিয়ে এই দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমরা চাই, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং নারীর অধিকার রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। একইসঙ্গে যারা ইসলামিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত, তাদের সবাইকে ছাত্রী সংস্থা ট্যাগ দিয়ে বুলিংকে যেন জায়েজ করা না হয়। যারা সংস্থার সঙ্গে জড়িত, তারাও যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার না হন। আর এমন ঘটনা হলে শুধু ক্ষমা চেয়ে বিজ্ঞপ্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কর্তৃপক্ষ যেন শাস্তি নিশ্চিত করেন। এই দাবি থাকল।’
মন্তব্য করুন