বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আধুনিকায়ন। তার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব একদিকে যেমন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে করেছে গতিশীল, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।
গত এক বছরে (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ – ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) তার নেতৃত্বে অর্জিত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো হলো—
শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা: সার্টিফিকেট জালিয়াতি ও আর্থিক অনিয়ম প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা, নকলমুক্ত পরীক্ষা গ্রহণ, দ্রুত ফল প্রকাশ এবং ই-টেন্ডারিং প্রবর্তনের মাধ্যমে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। স্থগিত গৃহঋণ পুনর্বহাল ও বাস্তবায়ন পদক্ষেপ শিক্ষক–কর্মকর্তাদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।
অবকাঠামো ও আঞ্চলিক সম্প্রসারণ: পাইকগাছা ও শরণখোলা নতুন উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু, মেহেরপুরে জমি প্রাপ্তি, ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও যশোর আঞ্চলিক কেন্দ্রের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া ১২টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলমান।
যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান: EARN Project-এর মাধ্যমে এক লক্ষ NEET যুবকের কর্মসংস্থান সহায়তা, HEAT Project-এ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, Blended TVET বাস্তবায়ন এবং বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় SSC (কারিগরি) প্রোগ্রাম চালু হয়।
শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগ: প্রবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পরীক্ষা ও টিউটরিং, তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের জন্য ফি মওকুফ ও নিরাপদ আশ্রয়, শিক্ষার্থী সেবার উন্নয়নে একাধিক কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: নাইজেরিয়া, আফগানিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাডেমিক সহযোগিতা; ভারত, নেপাল ও চীনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ; বিদেশে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ও টিউটরিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
গবেষণা ও একাডেমিক অগ্রগতি: এমফিল ও পিএইচডি গবেষকদের জন্য কর্মশালা, ‘রিসার্চ ক্যাম্পিং-২০২৫’, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ সেমিনারসহ গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক পদক্ষেপ: আধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনা, মিডিয়া সেন্টারের আধুনিকায়ন, ‘শিক্ষা চ্যানেল’ সম্প্রচার, মেধাস্বত্ব অধিকার রক্ষায় প্রশিক্ষণ, পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ গাড়ি চালনার উপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়িয়েছে।
জাতীয় ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম: ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন, মহান বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি ও পহেলা বৈশাখ বর্ণাঢ্য উদযাপন, প্রথমবারের মতো অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ড. এম. শমশের আলীকে প্রফেসর ইমেরিটাস উপাধিতে ভূষণ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমঝোতা: NSDA, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, বিপসট ও সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
মানবিক উদ্যোগ: তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক, নকল প্রবণতা রোধে কঠোর ব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও সুনাগরিক তৈরির প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. ওবায়দুল ইসলামের প্রজ্ঞাময় নেতৃত্বে গত এক বছরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক, শিক্ষার্থী-বান্ধব ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতামুখী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সফল কর্মময় জীবনের জন্য মাননীয় উপাচার্য মহোদয়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমরা বিশ্বাস করি, তার দিকনির্দেশনায় বাউবি আরও এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে।
মন্তব্য করুন