

২০২৬ সালের আগেই সিরিয়ার শ্রমবাজার গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিজার অ্যাক্টের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সঙ্গে ধীরে ধীরে যোগাযোগ বাড়ায় নতুন সুযোগ তৈরি হলেও বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শ্রমবাজার বিশেষজ্ঞরা।
মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ মুনির আব্বাস বলেন, সিরিয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব, যোগাযোগ ও দলগত কাজের মতো মৌলিক দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে চাকরির বাজারে এলেও নিজের কথা উপস্থাপন বা সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করার মতো প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারেন না।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ও বাস্তব চাকরির চাহিদার মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান রয়েছে। পাঠ্যক্রমে বাস্তব কাজের প্রয়োজনীয়তা প্রতিফলিত হয় না। ফলে একদিকে বেকারত্ব বাড়ছে, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষ কর্মী না পাওয়ার অভিযোগ করছে।
আব্বাস বলেন, চাকরির সুযোগ একেবারে নেই—এমন ধারণা সঠিক নয়। বিভিন্ন চাকরি মেলায় দেখা গেছে, হাজার হাজার পদ খালি আছে। তবে চাকরিপ্রার্থী ও নিয়োগদাতাদের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ নেই এবং জাতীয় পর্যায়ে কোনো একক শ্রমবাজার প্ল্যাটফর্মও নেই।
তিনি আরও বলেন, সিরিয়ায় হালনাগাদ জাতীয় শ্রমবাজার তথ্যভান্ডারের অভাব বড় সমস্যা। নির্ভরযোগ্য তথ্য না থাকায় সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য কার্যকর কর্মসংস্থান নীতি তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার আশঙ্কাও রয়েছে বলে জানান তিনি। এ জন্য সিরীয় কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া, পুনঃপ্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেন আব্বাস।
অন্যদিকে, এনজিও ফোরামের সমন্বয় পরিষদের প্রধান লুয়াই হাব্বাব বলেন, বেসরকারি সংস্থাগুলো সরকার, বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে। মাঠপর্যায়ে শ্রমবাজারের প্রকৃত চাহিদা চিহ্নিত করতে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিরিয়ার শ্রমবাজারের মূল সমস্যা চাকরির অভাবের পাশাপাশি দক্ষতার ঘাটতি, তথ্য সংকট ও সমন্বয়হীনতা। চলমান পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আগামী কয়েক বছরই হবে সিরিয়ার শ্রমবাজারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তথ্যসূত্র : শাফাক নিউজ
মন্তব্য করুন