

রাজশাহীর কলেজ শিক্ষার্থী ঔড়ব আজাদ (১৭) এ বছরের ‘দ্য কুইন’স কমনওয়েলথ এসেই কম্পিটিশন ২০২৫’-এ সিলভার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬টি দেশের অংশগ্রহণকারীদের জমা দেওয়া ৫৩ হাজার ৪৩৪টি রচনার মধ্যে তার প্রবন্ধ ‘দ্য হাঙ্গার দ্যাট গ্রিউ’ বিচারকদের নজর কাড়ে।
ঔড়ব রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের (ইংরেজি ভার্সন) একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাড়ি রাজশাহী নগরের সাগরপাড়া এলাকায়। বাবা আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ পেশায় সাংবাদিক, মা দুলারী খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
প্রতিযোগিতার নির্ধারিত বিষয়ে অংশ নিয়ে ঔড়ব রচনা লিখেছে লোককাহিনী ও পুরান অবলম্বনে। বাল্মীকির ‘রামায়ণ’-এ শকুন জটায়ুর বীরত্বগাথা ও আরও কিছু প্রচলিত বীরোচিত গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সে এই প্রবন্ধ রচনা করে। জটায়ু যে রাবণের হাত থেকে সীতাকে রক্ষা করতে প্রাণ দেয়—সেই বীরত্বের সূত্র ধরে লেখক নিজেকে এক শকুনছানার চরিত্রে কল্পনা করেছে। রচনায় সে মানুষের মধ্যে ধর্ম, পোশাক, উপাসনালয় কিংবা রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে সৃষ্ট বিভেদের সমালোচনা করেছে।
পুরস্কার সম্পর্কে ঔড়ব বলেন, ‘কমনওয়েলথ কর্তৃপক্ষ অফিশিয়াল ই-মেইলে আমাকে পুরস্কারের খবর জানিয়েছে, সঙ্গে সনদও পাঠিয়েছে। গত মে মাসে আমি রচনাটি জমা দিই।’
মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সে আরও বলেন, ‘মানুষ নানা প্রতীকের মাধ্যমে নিজেদের আলাদা করে—যা কখনো সংঘাত কিংবা দাঙ্গায় রূপ নেয়। কিন্তু একটি শকুনছানার চোখে এসব ভেদাভেদ নেই। মানুষেরাও যদি সেই শিশুচোখে একে অন্যকে দেখতে পারে, পৃথিবী আরও শান্ত হবে।’
উল্লেখ্য, ‘দ্য কুইন’স কমনওয়েলথ এসেই কম্পিটিশন’ বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো আন্তর্জাতিক স্কুলভিত্তিক লেখালেখির প্রতিযোগিতা। ১৮৮৩ সাল থেকে রয়্যাল কমনওয়েলথ সোসাইটি এটি আয়োজন করে আসছে। প্রতি বছর কমনওয়েলথের মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিযোগিতার থিম নির্ধারিত হয়, যাতে তরুণরা পরিবেশ, বৈষম্য, যুব নেতৃত্বসহ গুরুত্বপূর্ণ সমসাময়িক বিষয়ে চিন্তাশীল হতে পারে। এ বছর সদস্য দেশগুলোর ৫৩ হাজার ৪৩৪টি জমা পড়া প্রবন্ধ গত বছরের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেশি।
মন্তব্য করুন