শুরু হতে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রথম রাজনৈতিক টকশো কাজী জেসিনের ‘পয়েন্ট অব অর্ডার’।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাংবাদিকতার ইতিহাসে অন্যতম সাহসী কণ্ঠস্বর কাজী জেসিন এক দশক আগে আওয়ামী সরকারের চাপে বন্ধ হওয়া তার জনপ্রিয় রাজনৈতিক টকশো ‘পয়েন্ট অব অর্ডার’ নিয়ে আবারও ফিরছেন বাংলাভিশন-এ। অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে প্রতি শনি থেকে মঙ্গলবার, রাত ১১টা ৩০ মিনিটে।
যখন দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছিল, তখন কাজী জেসিন প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় দাঁড়িয়ে ক্ষমতার মুখোমুখি প্রশ্ন তোলার সাহস দেখান। তার সঞ্চালিত ‘পয়েন্ট অব অর্ডার’ ছিল বাংলাদেশে প্রথম রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, যা শেখ হাসিনার দমনমূলক শাসনের সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠান বন্ধের পেছনে ছিল রাষ্ট্রীয় হুমকি, সেন্সরশিপ এবং রাজনৈতিক চাপ- সেন্সরশিপ মেনে না নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েন কাজী জেসিন। কোনোরকম রাজনৈতিক চাপ, ভয়-ভীতির কাছে নত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয় পয়েন্ট অব অর্ডার, বাংলাভিশনকেও পড়তে হয় হুমকির মুখে।
দীর্ঘ প্রায় পনেরো বছর পর আবারও এই অনুষ্ঠান শুরু প্রসঙ্গে কাজী জেসিন বলেন, এই শোটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার নিপীড়নের গল্প, অনেক কিছু হারিয়েছি আমি- শুধু সাংবাদিক হিসেবে নীতিপ্রশ্নে কম্প্রোমাইজ না করায়, সততার প্রশ্নে অটুট থাকায় আমি হারিয়েছি কর্মময় জীবনের একটা যুগ, জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছি কর্মহীনভাবে, আতংকে। পয়েন্ট অফ অর্ডার শুধু কোনো রাজনৈতিক শো না- এটা অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, নিপীড়নের বিরুদ্ধে ছিল প্রতিবাদের স্মারক, জনগণের কণ্ঠস্বর। ঠিক সেই প্রত্যয় থেকেই এই কাজ করে যেতে চাই। চলমান অনুষ্ঠান টাইমলাইন বাংলাদেশ থেকে এই অনুষ্ঠানটি আলাদা- এখানে জন-মানুষের প্রশ্নের সুযোগ রাখতে চাই- সংকট নিয়ে কথা বলতে চাই আরও খোলাখুলি।
‘পয়েন্ট অব অর্ডার’ নিয়ে ফিরছি জন-মানুষের প্রশ্নের অধিকারকে সমুন্নত রাখতে, অন্যায়, দুর্নীতি, অনিয়ম ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠকে জাগিয়ে রাখতে- বলেন কাজী জেসিন।
মন্তব্য করুন