

আজকাল স্ট্রোক বা ব্রেন অ্যাটাকের ঘটনা ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। অনেকেই হঠাৎ কথা বলা বা চলাফেরা হারিয়ে ফেলছেন, আবার কেউ কেউ হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই বিপদের মুখে পড়ছেন।
চিকিৎসকদের মতে, এর অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। সময়মতো যত্ন ও সচেতনতা থাকলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, স্ট্রোক মূলত দুই ধরনের-
ইস্কেমিক স্ট্রোক: এতে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
হেমারেজিক স্ট্রোক: এতে দুর্বল রক্তনালি ফেটে মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়।
আরও পড়ুন : বাঁধাকপি-ফুলকপি কি থাইরয়েডের জন্য সত্যিই ক্ষতিকর
আরও পড়ুন : শিশুদের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সারের সাধারণ কিছু লক্ষণ
দুই ক্ষেত্রেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে না নিলে জীবনহানির ঝুঁকি থাকে। সময়মতো চিকিৎসা পেলে অনেক ক্ষেত্রে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
ডা. দেবর্ষির মতে, যাদের হাই ব্লাড প্রেসার রয়েছে, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। রক্তচাপের ওষুধ একদিনও বাদ দেওয়া যাবে না। এমনকি গর্ভাবস্থা বা অসুস্থতার সময়েও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
বর্তমানে ৩০-৪০ বছরের অনেকেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডা. দেবর্ষি বলেন, এর প্রধান কারণ অস্বাস্থ্যকর ও বসে থাকা জীবনযাপন। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করা, শরীরচর্চা না করা, অনিয়মিত ঘুম, অতিরিক্ত মানসিক চাপ- সব মিলিয়ে ঝুঁকি বাড়ায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: নিয়মিত প্রেশার মাপুন এবং ওষুধ কখনো বাদ দেবেন না।
খাবারে সচেতন হোন: লবণ ও সোডিয়াম কমান, জাংক ও প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
শরীরচর্চা করুন: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: স্থূলতা বা ওবেসিটি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধূমপান ও মদপান ছাড়ুন: এগুলো রক্তচাপ বাড়িয়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে।
মানসিক চাপ কমান: অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা রক্তচাপ বাড়ায়, তাই রিল্যাক্স করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সমস্যা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন : দাসদের খাবার থেকে রাজকীয় রান্নায়, কতটা উপকারী এই ছোট্ট সাদা কোয়া?
আরও পড়ুন : শীতে কলা খাওয়া কি ক্ষতিকর
স্ট্রোক হঠাৎ আসে, কিন্তু আগেভাগে সতর্ক থাকলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা, সঠিক খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ব্যায়াম - এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই পারে বড় বিপদ থেকে আপনাকে দূরে রাখতে।
স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীন হবেন না। আজ থেকেই নিজের যত্ন নিতে শুরু করুন।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন