

গোসলের পানির তাপমাত্রা আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। শীতকালে বেশিরভাগ মানুষ গরম পানি পছন্দ করেন, কারণ এটি আরামদায়ক এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে শরীরকে উষ্ণ রাখে। তবে পানির তাপমাত্রা আপনার স্বাস্থ্যে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।
যেমন, গরম পানি আপনার পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। কিন্তু শীতকালে কম আর্দ্রতার কারণে গরম পানি ত্বককে শুষ্কও করে দিতে পারে। অন্যদিকে, ঠান্ডা পানি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে; কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের জন্য এটি অস্বস্তিকর, বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আছে বা ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা কম।
চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে গরম ও ঠান্ডা পানিতে স্নানের উপকারিতা ও ক্ষতিকারক দিকগুলো।
গরম পানির উপকারিতা
- গরম পানির উষ্ণতা পেশির টান কমাতে সাহায্য করে। এটি মানসিক চাপ কমাতেও সহায়ক। তাই শীতে শরীর ব্যথা বা ক্লান্তি অনুভব করলে গরম পানি উপকারী।
- গরম পানি রক্তনালি প্রসারিত করে, ফলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং ঠান্ডাজনিত ব্যথা বা শক্তভাব কমে।
- গরম পানির বাষ্প নাকের বন্ধভাব বা সর্দি কমাতে সাহায্য করে, যা শীতের দিনে খুবই উপকারী।
গরম পানির ক্ষতিকারক দিক
- অনেকক্ষণ গরম পানির সংস্পর্শে থাকলে ত্বক তার প্রাকৃতিক তেল হারায়। এতে শীতের শুষ্কতা আরও বাড়ে এবং ত্বকে চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে।
- গরম পানি ত্বকের বাইরের স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, ফলে ত্বক আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না এবং সহজেই পরিবেশের ক্ষতিকারক প্রভাবের শিকার হয়।
- একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগ থাকলে গরম পানি এসব সমস্যা আরও বাড়াতে পারে, কারণ এতে ত্বকের প্রয়োজনীয় তেল কমে যায়।
ঠান্ডা পানির উপকারিতা
- নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে স্নান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে পারে। এটি শরীরে সাদা রক্তকণিকার উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে।
- ঠান্ডা পানি শরীরকে সতেজ করে তোলে এবং শক্তি বাড়ায়। এতে অলসভাব কমে এবং মনোযোগ বাড়ে, যা শীতকালে বিশেষভাবে প্রয়োজন।
- ঠান্ডা পানি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলে ব্যথা, ফোলা ভাব বা জয়েন্টের সমস্যা কমতে পারে।
ঠান্ডা পানির ক্ষতিকর দিক
- হঠাৎ ঠান্ডা পানি লাগলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে বা যারা অ্যাজমা/ব্রঙ্কাইটিসে ভুগছেন তাদের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।
- যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, রক্ত সঞ্চালন দুর্বল, বা হৃদ্রোগ আছে তাদের জন্য ঠান্ডা পানি শীতে শরীরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে।
- ঠান্ডা পানিতে স্নান করলে কিছু মানুষের দীর্ঘ সময় ঠান্ডা অনুভব হয়, যা শীতে অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।
সেরা উপায় হলো ভারসাম্য রাখা। শীতে কুসুম গরম পানি স্নানের জন্য সবচেয়ে ভালো, কারণ এটি গরম ও ঠান্ডা—দুইয়ের চরম প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে আরাম দেয়।
সূত্র: এনডিটিভি
মন্তব্য করুন