কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সপ্তাহজুড়ে সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ ভ্রমণে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে। এবার সে তালিকায় যুক্ত হলো ফ্রান্স। সেসঙ্গে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেটি উত্তরণে সব পক্ষকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
রোববার (২৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় নিজ দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে এ সতর্কবার্তা জানায় ঢাকার ফরাসি দূতাবাস।
সতর্কবার্তায় ফরাসি দূতাবাস বলেছে, ‘সবাইকে শান্ত, সংযমী থাকার আহ্বান জানাই। সে সঙ্গে নতুন করে যাতে সংঘাত না ঘটে, এর জন্য সংলাপের আহ্বান জানাই।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ফ্রান্সের যেসব নাগরিক থাকেন, তাদের এবং ফরাসি সম্প্রদায়ের যারা বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেয়। এক পর্যায়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেয়। তাদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামের অবরোধও দেয়। এক পর্যায়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীসহ সারা দেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করে হল খালি করার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করা হয়। গত ১৮ জুলাই আন্দোলনকারীরা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেয়। ব্যাপক ভাঙচুর হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশানসকে সহায়তায় মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৮ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সহিংসতায় কখনো বলা হচ্ছে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসলে মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রসহ বিভিন্নভাবে এ তথ্য জানা গেছে।
তিনি বলেন, মৃতদের মধ্যে পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।