এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের জেরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। তারা হলেন কাস্টমসের শুল্কনীতির সদস্য হোসেন আহমদ ও ভ্যাটনীতির সদস্য ড. আব্দুর রউফ, আয়কর বিভাগের এনবিআর সদস্য আলমগীর হোসেন ও কর কমিশনার শাব্বির আহমদ।
বুধবার (২ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) এ নিয়ে পৃথক আদেশ জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।
পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘তাদের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। যেহেতু, জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া প্রয়োজন, এ বিবেচনায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তাদের চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। তবে তারা অবসরকালীন সব সুবিধা পাবেন।’
যদিও অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, কাজ করলে সমস্যা হবে না।
এদিকে আন্দোলনের পরদিন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান সবাইকে সবকিছু ভুলে রাজস্ব আহরণে মনযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এর আগে গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বন্ধ রাখায় কমিশনার জাকির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তার স্থলে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বন্ড কমিশনারেট মোহাম্মদ শফিউদ্দিন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন এনবিআর ও এর অধীনস্থ কাস্টমস এবং ভ্যাট ও আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য সব দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ ছাড়া ২৮ ও ২৯ জুন কাস্টম হাউস বন্ধ রেখে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করেছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এনবিআর বিভক্তের প্রতিবাদ ও সংস্থাটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করে এনবিআরের কর্মকর্তারা। গত সোমবার কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনের কর্মীদের চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এনবিআরের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনের সব শ্রেণির চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস’ ঘোষণা করার মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার।
অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন-২০২০ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নিলে বা অন্যকে প্ররোচিত করলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া তাকে সর্বোচ্চ ১ বছরের দণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধানও রয়েছে আইনটিতে।
মন্তব্য করুন