কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সংস্কারবাদী দলের মিথ্যা মামলা, দুই সংগঠনের প্রতিবাদ

ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

সংবাদ প্রকাশের জেরে দেশকাল নিউজ ডটকমের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলা করেছে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দল (বিআরপি)। এই মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা সাব-এডিটসর কাউন্সিল (ডিএসইসি) ও ঝিনাইদহ সাংবাদিক ফোরাম।

প্রতিবাদ বিবৃতিতে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা সাব-এডিটসর কাউন্সিলের সভাপতি মুক্তাদির অনিক ও সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাংবাদিক আলমগীর কবীর ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক কোষাধ্যক্ষ। লেখালেখি ও গবেষণা ও সাংবাদিকতায় তার সুনাম প্রশংসিত। সংবাদ প্রকাশের জেরে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দল প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সাংবাদিক আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে যে বানোয়াট মামলা করেছে তা বিস্ময়কর ও নিন্দাজনক।’

অপর এক বিবৃতিতে ঝিনাইদহ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ বেগম পলি বলেন, ‘সংস্কারবাদী দলটি একই অভিযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, খুলনা, পাবনা, ঝিনাইদহের আদালতে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কল্পনাপ্রসূত ও হয়রানিমূলক একাধিক মামলা করেছে। এ ধরনের মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের শামিল। আমরা মামলার প্রতিবাদ জানাই।’

অবিলম্বে এ সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকদের দুই সংগঠন। পাশাপাশি মামলাবাজ চক্রের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায় মামলাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সংগঠন দুটি।

মামলার বিষয়ে সাংবাদিক আলমগীর কবীর বলেন, ‘আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। মামলায় যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা বানোয়াট।’

এই দলের মহাসচিব তহিদুল ইসলাম জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একাধিক হত্যা মামলার আসামি। জাল টাকা ছাপিয়ে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছিলেন তিনি। লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ার পর দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানকে দিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যার হুমকি ও চাঁদাবাজির মামলা করিয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সাংবাদিকের।

দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে হত্যার মামলা

সংস্কারবাদী পার্টির মহাসচিব তহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা ও হত্যা চেষ্টার একাধিক মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার মামলা নম্বর: ৫৭। ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মো. রফিক পাটোয়ারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। রফিক পাটোয়ারী মামলায় উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীর পান্না ম্যানশন এলাকায় আসামিরা হত্যার উদ্দেশে তাকে গুলি ছোড়েন। গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। রফিক পাটোয়ারীর সঙ্গে থাকা মো. শিহাব উদ্দীন নামে এক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। এই মামলায় গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ নম্বর আসামি। বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দলের নেতা তহিদুল ইসলাম মামলাটির ৬৪ নম্বর আসামি।

তহিদুলের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী আমলে আদালতে আরেকটি হত্যা মামলার বাদী হলেন হীরা নামে একজন ব্যক্তি। পিটিশন মামলার নম্বর ৮৩৮/২৪। এই মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মামলাটির ২৩ নম্বর আসামি তহিদুল ইসলাম। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় তহিদুল ইসলামের পরিচয় দেওয়া হয়েছে ডিবি হারুনের সোর্স হিসেবে।

এ ছাড়া তহিদুলের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের হওয়া মামলা নম্বর ১৬। এই মামলাটি করা হয় ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর। এই মামলার ৬৪ জন আসামির মধ্যে তহিদুল ৩৫ নম্বর আসামি। এই মামলাতেও তহিদুলের পরিচয় ডিবি হারুনের সোর্স উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি তহিদুল ৪ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান চালাকালে ধানমন্ডি এলাকায় হত্যায় অংশ নেন।

তহিদুলের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া আরেকটি মামলা নম্বর ৬৬। ২০২৫ সালের ১৭ জানুয়ারি মো. সানি হোসেন এই মামলা করেন। মামলায় তহিদুল ৬৪ নম্বর আসামি। এই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তহিদুল অস্ত্র হাতে আন্দোলন দমাতে অংশ নেন। জাল টাকা ছাপানোর ব্যবসা জাল টাকা ছাপানোর অভিযোগে সংস্কারবাদী দলের মহাসচিব তহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা রয়েছে। ২০২১ সালের ৪ জুলাই পল্লবী থানার মামলার নম্বর: ০৮। এই মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি তিনি। মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকার ১০ নম্বর রোডের এক বাসায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তহিদুলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২। তামান্না ওভারসীজ এজেন্সির অফিসে তহিদুল ও তার সহযোগীরা সেখানে জাল টাকার কারখানা তৈরি করেন। র‌্যাব অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ লাখ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে। এই মামলায় জামিন নিয়ে পলাতক হন তহিদুল ইসলাম। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এই মামলার অভিযোগপত্রে তহিদুলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী তহিদুলের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হওয়ায় গত ২৮ মে তহিদুল ইসলাম লন্ডনে পালিয়েছেন। গণহত্যার মামলা হওয়ার পর তহিদুল ইসলাম তার বাবা মো. নূরুল হককে সংস্কারবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান করেছেন। নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধন পেতে আবেদনও করেছে সংস্কারবাদী দল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আরডিজেএ’র সভাপতি বাতেন বিপ্লব, সেক্রেটারি ইমন

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের টিকিটের মূল্য প্রকাশ, কিনবেন যেভাবে

সুদানে মসজিদে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৭৮

বাংলাদেশি পাসপোর্ট-এনআইডি নিয়ে কী বলছেন টিউলিপ

৫ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ

বাংলাদেশ ম্যাচের আগে দলের সাথে যোগ দেবেন ভেল্লালাগে

ঢামেকে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৫

বিএনপি নেতারা সালিশে গেলেই বহিষ্কার : শেখ ফরিদ

খাওয়া ও বিশ্রামে ব্যস্ত, ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার

এক ঘরে শিশুর গলাকাটা মৃতদেহ, পাশের ঘরে ঝুলছিল অন্তঃসত্ত্বা মা

১০

লঘুচাপের শঙ্কা, দেশজুড়ে বৃষ্টির আভাস

১১

সাদাপাথর লুটের ঘটনায় লাইনম্যান মামুন গ্রেপ্তার

১২

‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে’

১৩

‘আসুন, আমরা তারেক রহমানকে সহযোগিতা করি’

১৪

হঠাৎ ট্রাম্প-শি ফোনালাপ, কী কথা হলো

১৫

কুড়িগ্রাম আইনজীবী সমিতি নির্বাচন / ১৮ পদে জিতেছে বিএনপি, ১টিতে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী

১৬

জামায়াত নেতার হাত ভেঙে দিল মাদকসেবীরা

১৭

ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর ওপর হামলা, দুই জওয়ান নিহত

১৮

বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ : অ্যাডভোকেট সালাম

১৯

কোনো ষড়যন্ত্রই সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না : ডা. জাহিদ

২০
X