কোরআন অবমাননার অভিযোগে অপূর্ব পাল নামে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। শনিবার (০৪ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সময় জনরোষের কবলে পড়েন। সে সময় আঘাত পাওয়ায় তাকে রাতেই হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আজ ভোরে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর কালবেলাকে বলেন, রাতে তাকে থানায় নেওয়ার সময় একদল লোক হামলা করে। এতে কিছুটা আহত হয় অপূর্ব। তাকে থানায় এনে মামলা রেকর্ড করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভোরেই আদালতে নেওয়া হয়। এখন সে আদালতেই আছে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত অপূর্ব পালকে অনেকে মানসিক রোগী বলে দাবি করছেন। এবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ।
রোববার (৫ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে, তা পূর্বের সব অপকর্মকে ছাড়িয়ে গেছে। নির্ভার চিত্তে ঠোঁটে শিস বাজাতে বাজাতে কোরআন পদপিষ্ট করার ভিডিওটি যারাই দেখেছেন, সবারই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা।’
‘কেউ কেউ অপূর্ব পালকে মানসিক রোগী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। পূর্বেও অনেক ইসলাম অবমাননাকারীকে মানসিক রোগী বলে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কথা হলো, একজন মানসিক রোগী কীভাবে দেশের নামকরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে! তাছাড়া মানসিক রোগীরা কেন বারবার ইসলাম ধর্মের ওপরই আক্রমণ করে!’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করে আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ক্লাসে হাদিসের উদাহরণ আনায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে ইতোপূর্বে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ কোরআন অবমাননার ঘটনা ভাইরাল হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা অপূর্ব পালের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। এমন কুলাঙ্গার ছাত্রকে প্রশ্রয় দেওয়ার অপরাধে তাদেরকে ক্ষমা চাইতে হবে। এদেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামবিরোধী এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশে এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যায় না। অপূর্ব পাল যা করেছে, এটা ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর সুস্পষ্ট উসকানি। আমরা অবিলম্বে তার দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
‘পাশাপাশি সরকারের প্রতি আমাদের দাবি, অবিলম্বে ধর্মঅবমাননা বিষয়ে কঠোর ও সুস্পষ্ট আইন তৈরি করে এর বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে হবে। নতুবা দেশের শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা নষ্টকারী ন্যক্কারজনক এই ঘটনা বারবার ঘটতেই থাকবে।’
মন্তব্য করুন