ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন। এসময় বিমানবন্দরে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে শহিদুল আলমকে বহনকারী বিমান শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে শহিদুল আলম বলেন, ‘প্রথমেই বলতে চাই এখনো গাজা মুক্ত হয়নি। তাই গাজা নিয়ে আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’ এ সময় দেশবাসী, অন্তর্বর্তী সরকার, তুরস্ক সরকার এবং তুর্কি এয়ারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ইসরায়েলিদের বর্বর আচরণের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে আটকের সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরাইলি সেনা সদস্যরা বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং তার পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। এমন ন্যক্কারজনক কাজ আমাকে খুবই আঘাত করেছে। একটি দেশের পাসপোর্ট এমনভাবে ছুড়ে ফেলা অপরাধ, আর তারা এমন অপমান করে পার পেয়ে যাবে তা মেনে নেওয়া যায় না।’
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নাগরিক অধিকার নিয়েও সোচ্চার তিনি। গাজা অভিমুখী একটি নৌবহরে অংশ নিয়ে গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হন শহিদুল আলম।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম গাজা অভিমুখে ওই নৌযাত্রা শুরু করেছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এ বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা।
পরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর থেকেই শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
এদিকে, শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তার প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্তব্য করুন