

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের মধ্যে শোক ও ক্ষোভের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত হওয়ার পর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন,
"শহিদ ওসমান হাদী জিন্দাবাদ। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
আমাদের ও যেন শহীদি মৃত্যু হয়। আমৃত্যু যেন আমরা জুলাইয়ের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যেতে যেতে শহিদ হই।"
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও হাদির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, “এই রক্তের হিসাব দিতে হবে। উই আর হাদি।”
এনসিপির পক্ষ থেকে প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক শোকবার্তায় বলা হয়, দলের একজন সাহসী সহযোদ্ধাকে হারিয়ে তারা গভীরভাবে ব্যথিত। বিবৃতিতে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় এবং তাঁর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
হাদির মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শোক মিছিল আয়োজনের ঘোষণা দেন জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় চলাচলের সময় মোটরসাইকেলযোগে আসা হামলাকারীদের গুলিতে মারাত্মক আহত হন ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার আশায় তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও শেষ পর্যন্ত জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর সহযোগী হিসেবে মোটরসাইকেল চালক আলমগীর শেখের নামও তদন্তে উঠে এসেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা, তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে বিদেশে আত্মগোপনে থাকতে পারেন।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেপ্তারদের তালিকায় রয়েছেন ফয়সালের বাবা-মা, স্ত্রী এবং শ্যালকসহ নিকটাত্মীয়রা।
মন্তব্য করুন