চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে বিদায়ের হুমকি দেওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে প্রশাসনের নারী ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সংগঠনের সভাপতি ফারহিনা আহমেদ এবং মহাসচিব সায়লা ফারজানার সই করা প্রতিবাদলিপিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেই সঙ্গে তার শাস্তির দাবি জানানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গত ১৯ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন উন্মুক্ত জনসভায় ভোলাহাট উপজেলার ইউএনও উম্মে তাবাসসুমের উদ্দেশে অপেশাদার ও অশোভন বক্তব্য দেন। তার এ অশালীন বক্তব্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্কের সব সদস্য সংক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। কারণ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়েই সরকারি সব কাজ বাস্তবায়ন হয়।
সরকারের নিযুক্ত জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মচারী জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, নির্বাচন ও পরীক্ষা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করে।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, বিশেষ করে নারী কর্মচারীরা তাদের দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার সঙ্গে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন। সরকারি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একজন ইউএনওকে মানহানিকর অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়ে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
মো. রাব্বুল হোসেন একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে যেসব উক্তি করেছেন, তা অশোভন এবং অভদ্রজনোচিত। এ ছাড়া তিনি একজন নারীর প্রতি যে ধরনের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা বাঙালি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিও চরম অবমাননাকর। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী কর্মচারীর প্রতি উক্ত জনপ্রতিনিধির এমন অসংবেদনশীল ও অশোভন আচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং নিন্দনীয়। এরূপ আচরণ ও উক্তি মাঠপর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের কর্মোদ্দীপনার প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, এমন পরিস্থিতি ও আচরণের প্রতি বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। এরূপ আচরণ একজন দায়িত্বরত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ‘উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮’ অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল। তার অসদাচরণের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন—বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক এমনটাই প্রত্যাশা করে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে একদিকে মাঠপর্যায়ের কর্মচারীরা তাদের সম্মান ও মনোবল সমুন্নত রেখে পেশাদারিত্বের সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনে তৎপর থাকবে এবং পাশাপাশি এ জাতীয় নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন যে কোনো ব্যক্তি নারীর প্রতি সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল আচরণ করতে সচেতন হবেন।
মন্তব্য করুন