কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি– ভাষাসংগ্রামী, কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ৯৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমিতে বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। একক বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শারাবান তাহুরা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরী আমাদের জাতিসত্তার সূচক-যোদ্ধা। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সাংবাদিক, ভাষাসংগ্রামী এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক। তাঁর রচিত ভাষা আন্দোলনের অমর কবিতা, একইসঙ্গে মুক্তির চেতনায় ভাস্বর মুক্তিযুদ্ধেরও কবিতা।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরী ছিলেন সময়ের সাহসী সন্তান। ছাত্রজীবন থেকে তিনি প্রতিবাদী চরিত্রের মানুষ ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে তিনি ন্যায়সংগত মনে করতেন। চট্টগ্রামের সংস্কৃতি সম্মেলনে তরুণ বয়সে বাংলার বিখ্যাত লেখকদের সংস্পর্শ তাঁকে প্রগতির পদাতিকে পরিণত করে। তিনি বলেন, অসুস্থ শয্যায় ঢাকায় রাষ্ট্রভাষার দাবিতে লড়াইরত ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে মাহবুব উল আলম চৌধুরী তাৎক্ষণিক যে কবিতা রচনা করেন তা বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় ঘটনার স্মারক হয়ে আছে। তিনি বলেন, মাহবুব আলম চৌধুরী সম্পাদিত সীমান্ত (১৯৪৭-৫২) সাহিত্য পত্রিকা বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে।
শারাবান তাহুরা বলেন, ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক কবিতার লেখক মাহবুব উল আলম চৌধুরী বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
ড. হাসান কবীর বলেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরীর মতো আলোকিত গুণীজনেরাই বাংলাদেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, কবি ও লেখক হিসেবে আমাদের ইতিহাসে মাহবুব উল আলম চৌধুরী অমর হয়ে থাকবেন। আজীবন লেখার টেবিলে ও সংগ্রামের ময়দানে তিনি মাটি ও মানুষের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন।
মন্তব্য করুন