বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ব্যর্থ উল্লেখ করে অবিলম্বে তা বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পিপলস্ পার্টির (বিডিপিপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, নতুন সেই ইসির অধীনে দ্রুত একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পিপলস্ পার্টির উদ্যোগে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’-শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিডিপিপির এই চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারছে। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে আজ মানুষ স্বাধীন। গত ১৬ বছর এ দেশের মানুষকে জিম্মি করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিলো। দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলার দামাল ছেলেরা, ছাত্রসমাজ স্বৈরশাসককে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তাদের অপশাসন থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি। তিনি আরও বলেন, এখন সময় এগিয়ে যাবার। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব- আপনারা যৌক্তিক সময় নিয়ে যেসব সংস্কার করা দরকার সেটি করেন। বিশেষ করে এই বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনারদের বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে। রাজনৈতিক দলের বিতর্কিত, জটিল নিবন্ধন আইন বাতিল করে সহজ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিবন্ধন আইন করে গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করতে হলে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের বিধান সংবিধানবহির্ভূত, এটি বাতিল করতে হবে। দ্রুত একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বড়কিছু অর্জন করতে হলে ছোট কিছু হারাতে হয় এবং হারানোর সেই উদাহরণ আমরা ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে সৃষ্টি করেছি। আমরা আমাদের দলের একজন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ স্থগিত করেছি। দলের চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই ধরনের বার্তা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২১৭ জন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি, যেন দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসে। আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের পাশে রয়েছি। আমরা হাসপাতালে আহতদের দেখতে যাচ্ছি, সাধ্যমতো তাদের সহযোগিতা করছি। দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে অনেকগুলো পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। আমরা কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। আমরা শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই। সবাইকে নিয়ে ধৈর্য সহকারে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খান রনো, পারভীন নাসের খান ভাসানী, প্রেসিডিয়াম মেম্বার অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, মো. আতিকুর রহমান, মাহফুজা বেগম, আব্দুল মালেক, মহাসচিব হারুন অর রশিদ প্রমুখ নেতারা।
মন্তব্য করুন