যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য একটি ‘রোডম্যাপ’ প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে বিপ্লবী যুব সংহতির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
সাইফুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য ও কাজ সম্পর্কে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হবারও কোনো অবকাশ নেই। তাদের বিতর্কিত করার প্রয়াসও বন্ধ করা দরকার।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জরুরি কাজগুলো যেমন এগিয়ে নিতে হবে, তেমনি একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে তাদেরকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশও নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বিভ্রান্তি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের কাজের একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করারও আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, অভূতপূর্ব ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বৈষম্যহীন সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠনের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। কোনো হঠকারিতা বা রোমান্টিকতা দিয়ে সে সম্ভাবনা নষ্ট করা যাবে না।
তিনি বলেন, দেশের এই গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের অকুতোভয় তরুণ যুবারা উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারত এই পর্যন্ত আমাদের সৎ প্রতিবেশীর পরিচয় দিতে পারেনি। রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা বাংলাদেশকে পানিতে মারার ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশকে না জানিয়েই ভারত এবার একসঙ্গে তাদের পূর্বাঞ্চলের সব জলাধারের মুখ খুলে দিয়েছে। তিনি বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াতে যুব সম্প্রদায়সহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক বলেন, রংপুরে আত্মদানের মধ্য দিয়ে আবু সাঈদ ভয়কে পরাজিত করেছে এবং ছাত্র-তরুণরা দেশবাসীর মধ্যে হার না মানা অসীম সাহসের জন্ম দিয়েছে। মানুষের অধিকার আর মুক্তির জন্য হাসতে হাসতে যারা জীবন দিতে চায় তাদের হারানো যায় না।
তিনি গণঅভ্যুত্থানের হাজারো শহীদের রক্তভেজা পথে একটা বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ গঠনের সারথি হতে বিপ্লবী যুব সংহতির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় বিপ্লবী যুব সংহতির উদ্যোগে বন্যাপীড়িত মানুষদের রক্ষায় যুব উদ্যোগ আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
বিপ্লবী যুব সংহতির আহ্বায়ক বাবর চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য সচিব মীর রেজাউল আলমের সঞ্চালনায় প্রতিনিধি সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি নারী নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, বিপ্লবী কৃষক সংহতির সভাপতি আনছার আলী দুলাল, খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকবর খান, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বিপ্লবী রিকশা শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক জামাল সিকদার, প্রাক্তন ছাত্র নেতে রাশেদুল ইসলাম রাসেল, অ্যাডভোকেট ফায়েজুর রহমান মুনির, যুব প্রতিনিধি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মাসুম রেজা, মিশকাত শেখ,তানিশা রহমান, মাইনুদ্দিন, সুমন হাওলাদার, মো. মহসিন, জাহিদুল ইসলাম, রিমন শেখ, মো. হাসেম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন