শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে চিকিৎসকদের ‘সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ রয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৪ আগস্ট) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের বোর্ড দিনে দুই থেকে তিনবার বৈঠক করে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে কেবিনে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল রোববার খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সময় মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে গত বুধবার শারীরিক জটিলতার কারণে আবারও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
গত বছরের জুন মাসে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্রোগে ভুগছেন। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা জটিলতার কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর দফায় দফায় বাড়ে তার মুক্তির মেয়াদ। সবশেষ গত মার্চ মাসে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং বিদেশ যেতে না পারার দুটি শর্তই বহাল রেখে আরও এক দফা তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে সায় দেয় সরকার।
মন্তব্য করুন