কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রশিবিরের মানববন্ধন

আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি : কালবেলা
আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি : কালবেলা

আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা বিভাগের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক আলাউদ্দিন আবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হাফেজ আবু মুসা, ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি মোজাফফর হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিন। এ ছাড়াও মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগের দায়িত্বশীলবৃন্দসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা সময়ের দাবি। ইসলামি মূল্যবোধে উজ্জীবিত থেকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জনের সুযোগ নিশ্চিত করতেই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার অবকাঠামোগত ও চাহিদার আলোকে সংস্কার প্রয়োজন। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে রেখে সমৃদ্ধ জাতি গড়া সম্ভব নয়।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি বৈষম্য করা দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রাখার নামান্তর। ইসলামি জ্ঞান, নৈতিকতা ও আধুনিক দক্ষতায় সুসজ্জিত প্রজন্ম গড়ে তুলতে মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিবগাতুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক। তবে, বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই শিক্ষাব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন প্রতিক্ষেত্রে। বিশেষ করে, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অধিকাংশ শিক্ষক এমপিও আওতাভুক্ত নয় এবং যারা আছেন, তাদেরও যথাযথ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে না। দেশের অগ্রগতির জন্য আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন এবং জাতীয় শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি জরুরি।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাখাতে বরাবরই বাজেট বরাদ্দ অপ্রতুল। তার মধ্যেও মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়। গত অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ১.৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু প্রাথমিক শিক্ষার জন্য প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়, যদিও বর্তমান সময়ের চাহিদার আলোকে পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু পুরো মাদ্রাসা শিক্ষা (ইবতেদায়ি, দাখিল, আলিম) ও কারিগরি শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। এ থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়, মাদ্রাসা শিক্ষাকে কী ভয়াবহ অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কারে আমাদের ১১ দফা দাবি তুলে ধরছি।

আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষা সংস্কারে ছাত্রশিবিরের ১১ দফা দাবি :

১. ছয় মাসের মধ্যে সকল ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ এবং মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জটিল আইন ও বিধি সহজতর করতে হবে।

২. দাখিল ও আলিম পর্যায়ে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চালু করতে হবে।

৩. এসএসসি ও এইচএসসির মতো দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় নম্বরের সমতা বিধান করতে হবে।

৪. প্রতিটি জেলা শহরে একটি করে কামিল মাদ্রাসা জাতীয়করণ করতে হবে।

৫. ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান নিশ্চিত করা এবং উপস্থিতির ভিত্তিতে চূড়ান্ত পরীক্ষার নম্বর নির্ধারণ করতে হবে। ফলাফল প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে সনদ হস্তান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

৬. সকল ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু, সেশনজট নিরসন, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, নকলমুক্ত পরীক্ষা ও উত্তরপত্রের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

৭. অনার্স পর্যায়ে দ্রুত বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে এবং NTRCA-এর প্রিলিমিনারি সিলেবাসে মাদ্রাসা শিক্ষার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৮. মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডিজি অফিস ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৯. প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (BMTTI-এর আদলে) প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

১০. সকল মাদ্রাসায় কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞান ল্যাব (যেখানে বিজ্ঞান বিভাগ আছে) এবং উন্নতমানের লাইব্রেরি স্থাপন ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে।

১১. ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণা সেল গঠন, বাজেট বরাদ্দ এবং জেলা পর্যায়ে আরবি ভাষা কোর্স চালু করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রান্সপোর্ট বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে গাজী গ্রুপ

ভারতে পাথরচাপায় বাসের ১৮ যাত্রী নিহত

ঢাকার তাপমাত্রা নিয়ে দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস

চোরাই মোবাইল উদ্ধার অভিযানে পুলিশের ওপর হামলা

১২ দিনের ছুটি শেষে আজ খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সকালে খালি পেটে পানি পানের ৯ উপকারিতা

বেড়েছে যমুনার পানি

স্বপ্নভরা ছেলেটি আজ মাটির নিচে, মাদকবিরোধী রামেল হত্যায় স্তব্ধ গ্রাম

সাতক্ষীরার ‘বিতর্কিত’ মেডিকেল অফিসারকে মেহেরপুরে বদলি

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১০

আউটলেট ইনচার্জ পদে নিয়োগ দিচ্ছে আগোরা

১১

স্ত্রী তালাক দেওয়ায় আব্দুর রহিমের কাণ্ড

১২

সেভ দ্য চিলড্রেনে চাকরির সুযোগ

১৩

‘শেষবারের মতো আমার ছেলের মুখটা দেখতে চাই’

১৪

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আভাস

১৫

০৮ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৭

১২ দল ও সমমনা জোটের সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠক

১৮

১৭১ রোহিঙ্গাকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠাল বিজিবি

১৯

গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) খালেদ হোসাইনের নেতৃত্বে নতুন সদস্যদের গণসংহতি আন্দোলনে যোগদান

২০
X