নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আজকের প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাই আগামী দিনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। সুতরাং তাদের তাদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে জানতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশটি তোমাদের।
বুধবার (১৪ মে) বিকেলে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বৃত্তি প্রদান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কিন্তু চলে যাওয়ার পথে এবং আমাদের সময় প্রায় শেষ। আর তোমাদের সময় হচ্ছে শুরু। কাজেই সেই কথা মনে রেখেই তোমাদের সামনে যে দায়িত্ব সেটি গ্রহণের জন্য কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি নিতে হবে। এই সময়টা যদি তোমরা নষ্ট করো, পড়ালেখার পরিবর্তে রাস্তায় গিয়ে হৈ-হুল্লোড় করো তাহলে কিন্তু ভবিষ্যতে তোমাদের ওপর ১৮ কোটি মানুষের দেশকে পরিচালনার যে দায়িত্ব আসবে সেটি কিন্তু সঠিকভাবে পালন করতে পারবে না।
বৃত্তি প্রদান ও আলোচনা সভার আয়োজন করে মহানগর সাংস্কৃতিক ফোরাম। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. ইউনূস তালুকদার রাজুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থী সালমান হোসেন, সাবরিন আলম, ফাহমিদা আক্তার, মোহনা আক্তার, রেহেনামু বিনতে হোসেন, মারিয়া আক্তার, উসরাত প্রিয়তমা, জেরিন রহমান, সামিয়া ইসলাম, মনিকা আক্তার, আফসানা ইসলাম, নুরে জান্নাত আঁখি, জান্নাত আক্তার, ইশানি গো, অরপিতা চৌধুরী, সিলভিয়া জামান, মাহফুজা আক্তার, আফরোজা ইসলাম, রাইসাতুল অর্পাসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর মেডেল ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুলের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. মঈন খান বলেন, ছাত্রদের যে শক্তি আছে সেটি কিন্তু আমাদের নেই। এটি প্রকৃতির নিয়ম। তোমাদের সেই শক্তি আছে বলেই তোমরা সামনের দিকে এগিয়ে গেছো। বিগত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশের একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। সেটার গৌরব কিন্তু তোমাদের। আমরা যা গর্বের সঙ্গে বলি।
তিনি বলেন, তোমরা জুলাই-আগস্টে যে দায়িত্ব পালন করেছো সেখানে আসার জন্য বিগত ১৫ বছরের যে পরিস্থিতি, সেই পরিস্থিতি কিন্তু দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ তৈরি করে দিয়েছে। তারা একটি স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়াই করেছে। এরপরই তোমরা এসে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছো। কাজেই তোমরা যে গৌরবের অধিকারী হয়েছো সেটি তোমাদের ধরে রাখতে হবে।
ড. মঈন খান বলেন, তোমরা ভুল পথে গিয়ে কিংবা হেলাফেলা করে সেই গৌরব হারাও এবং তোমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন কর তাহলে তোমরাই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেননা, প্রবাদ আছে যে, ছাত্র নং অধ্যায় নং তপ: অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া করাটা তোমাদের কাছে তপস্যার। লেখাপড়া করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, এ কথাটি ভুলে গেলে চলবে না। নিশ্চয়ই তোমরা দেশের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করবে। তোমরা দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে মঙ্গলের পথে নিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাবে।
তিনি বলেন, ছাত্রদের যে শক্তি আছে সেই শক্তি কিন্তু আমাদের নেই। সেই শক্তি আছে বলেই সামনের দিকে এগিয়ে গেছো। জুলাই ছাত্র আন্দোলনে বাংলাদেশের বিপ্লবী পরিবর্তন এসেছে, সেই অর্জন তোমাদের। আমাদের সেই কথা গর্বের সঙ্গে বলে থাকি। বিগত ১৫ বছর সংগ্রাম করে জয়ের পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ। কাজেই সেই গৌরব তোমাদের ধরে রাখতে হবে। এই সুযোগ যদি হেলায় হারাও, ভুল পথে গিয়ে সুনাম নষ্ট করে দাও তাহলে শুধু তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বাংলাদেশের ভবিষ্যতে প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য করুন