২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের স্মৃতি স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন ও সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
সোমবার (৩০ জুলাই) রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আসিফুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির প্রমুখ।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, পনেরো বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছিল তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ জাতীয়তাবাদী বিভিন্ন দল অংশ নিয়েছিল। ফ্যাসিবাদের আমলে তরুণদের মতামত দেওয়ার অধিকার রাখা হয়নি, অথচ এ তরুণরাই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, জুলাই আন্দোলন শুরু করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আন্দোলনের সম্মুখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রদল। রাজপথে একক ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ছাত্রদলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি হামলা ও মামলার শিকার হয়েছে। একক ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছে। আমরা তাদের আত্মত্যাগ কখনো ভুলে যাবো না।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, জুলাই মাসের শুরুতে ছাত্রদল যে আয়োজন করেছে সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। জুলাই আন্দোলন এক দিনে হয়নি। হাজার হাজার মানুষ এখানে জীবন দিয়েছে। ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান আসাদের রক্তের মাধ্যমে হয়েছে। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সেদিন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফল হয়েছিল। আজকে আমরা খুনি হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। শহীদ ওয়াসিম, সাঈদের রক্ত কখনো বৃথা যাবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি আল্লাহর রহমতে ক্ষমতায় আসবে এবং তারেক রহমান দেশ পরিচালনা করবে। ইনশাআল্লাহ তারেক রহমান কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশে আসবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটি শুধু একটি প্রজ্বালন নয়, আজকের মোমবাতি প্রজ্বালন আগামী দিনে গণতন্ত্রের পদযাত্রায় এগিয়ে যাওয়া। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের মিনার, অধিকার প্রতিষ্ঠার মিনার। আমরা যখন আগে নৌকায় করে অনেক দূরে যেতাম, মাঝি বলত চুপ থাকুন ওই গ্রাম ডাকাতদের গ্রাম। হাসিনার আমলে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতদের গ্রাম। অনেক আতঙ্ক নিয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পার হতাম। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি সেই বায়ান্ন, ঊনসত্তরের বিশ্ববিদ্যালয় দেখছি যেখানে বইছে শান্তির সুবাতাস।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিল, বাধা দিলে সব বন্ধ হয়ে যাবে। আমার সবকিছু দিয়ে ছাত্রদের স্তব্ধ করে দেব। এত কিছু থাকার পরও গণতন্ত্রের জন্য ছাত্রদের যে সংগ্রাম, শেখ হাসিনা তা ঠেকাতে পারেনি। আজকের আলোক প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে আমাদের ৩৬ দিনের কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন হলো।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনীর কাছে ছাত্রদলের কত নেতাকর্মী গুম, খুন হয়েছেন। তারা নব্বই, আশির দশকে যে ভূমিকা পালন করেছে সেভাবে তারা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও ভূমিকা রেখেছে। এই সংগ্রাম বাস্তবায়ন করতে হলে আরও বাধা আসবে। সেই বাধা অতিক্রম করতে আমরা গণতন্ত্রের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করব।
মন্তব্য করুন