জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদ্যাপনের লক্ষ্যে নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি চলছে। চট্টগ্রাম নগরীতে পদযাত্রায় ব্যাপক সমাগম দেখা গেছে। শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নয়, এখানে হাজারো ছাত্র-জনতাকে দেখা গেছে। শিশু-কিশোর তরুণ-তরুণীর পাশাপাশি বয়স্কদেরও উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের অনেকেই শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের একনজর দেখতে এসেছিলেন।
রোববার (২০ জুলাই) কানায় কানায় পূর্ণ ছিল চট্টলার দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যান। সড়কের আশপাশেও ছিল উৎসুক জনতার উপস্থিতি। এর আগে বহদ্দারহাট থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়ে মুরাদপুর হয়ে বিপ্লব উদ্যানে সমাবেশস্থলে গিয়ে শেষ হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে যোগদান করতে দেখা যায়।
চট্টগ্রামের সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির নেতাকর্মীরা ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ সময় নাহিদ-হাসনাত-সারজিসদের একপলক দেখতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। তারা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’ স্লোগান ধরেন। সমাবেশস্থলে দাঁড়িয়ে উৎসুক জনতার সঙ্গে কথা হয় কালবেলার এই প্রতিবেদকে সঙ্গে।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আক্কাস আলী কালবেলাকে বলেন, আজ এখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়করা আসবেন বলে শুনেছি। সেজন্য বিকেল থেকে এখানে (বিপ্লব উদ্যান) অপেক্ষা করছি। যারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে তাদের একনজর দেখার জন্য এসেছি। নাহিদ-হাসনাতদের আমরা টিভিতে দেখেছি। সাহসী এই যুবকদের কাছ থেকে দেখার জন্য মূলত এখানে এসেছি।
সমাবেশে দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছেন জুলেখা আক্তার। তিনি বলেন, আমার এক ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে, আরেকজন ৮ম শ্রেণিতে। হাসনাত-নাহিদ এবং সারজিসদের ভক্ত তারা। ফেসবুকে দেখেছে তারা বিপ্লব উদ্যান আসছে সেজন্যই বাহানা করল নিয়ে আসার জন্য। তাই তাদের নিয়ে আসছি। তারুণ্যের জোয়ার দেখে ভালোই লাগছে।
নাহিদকে দেখার জন্য অনেকের সঙ্গে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক আসলাম আলী। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তারা আমাদের জুলাইয়ের নায়ক। তাদের নেতৃত্বেই শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাদের সরাসরি দেখার ইচ্ছে ছিল। আজ সেটি পূর্ণ হচ্ছে। স্বৈরাচার মুক্ত করায় আমরা তাদের শ্রদ্ধা জানাই ও সম্মান জানাই। আশাকরি তাদের নেতৃত্বেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে।
চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আরমান কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তবুও এসেছেন এনসিপির সমাবেশে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। এই মানুষগুলোর নেতৃত্বেই আমরা রাজপথে ছিলাম। তাদের ত্যাগ আমাদের স্বীকার করতে হবে। তাদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এখানে এসেছি। একইসঙ্গে তারুণ্যের রাজনীতির উচ্ছ্বাস কেমন সেটিও দেখার ইচ্ছে হলো।
মন্তব্য করুন