ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অধীন মতিঝিল থানার অন্তর্গত ১০নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মারুফ চৌধুরী সাগরের কর্মী মো. সাজিদ খানকে ১০নং ওয়ার্ড যুবদলের সদ্য ঘোষিত কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ত্যাগী-নির্যাতিতদের বাদ দিয়ে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে নিষ্ক্রিয়দের দিয়ে মতিঝিল ও শাহবাগ থানা যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন অবস্থায় এসব কমিটি পুনর্গঠনের দাবি পদবঞ্চিতদের।
এ বিষয়ে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর দক্ষিণ যুবদলের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
এর আগে বিকেলে যুবদলের এসব ইউনিট কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নয়াপল্টন মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। একপর্যায়ে মতিঝিল থানার পাশাপাশি শাহবাগ থানা যুবদলের ২০নং ও ২১নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে পড়েন।
শাহবাগ থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইমন চৌধুরী বলেন, আমরা রাজপথের পরীক্ষিত কর্মী। আমাদের উপেক্ষা করে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে অযোগ্য-নিষ্ক্রিয়দের দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এই কমিটি মানি না। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি এসব কমিটি বিলুপ্তপূর্বক অবিলম্বে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে নতুন কমিটি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অধীন চারটি থানা ও সাতটি ওয়ার্ডের নতুন আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
পদ বঞ্চিতদের অভিযোগ, পেশায় ব্যবসায়ী ও আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় মোহাম্মদ হাজি বিল্লালকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে শাহবাগ থানা যুবদলের আহ্বায়ক করা হয়েছে। কিন্তু অসংখ্য মামলার আসামি শাহবাগ থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চঞ্চলকে নতুন কমিটিতে বাদ দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল ও আইফোনের বিনিময়ে মোয়াজ্জেম হোসেন তপনকে থানা কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
পদবঞ্চিতদের আরও অভিযোগ, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হোটেল ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল হোসেন মোল্লাকে মতিঝিল থানা যুবদলের আহ্বায়ক করা হয়েছে। কিন্তু ত্যাগী-নির্যাতিত হিসেবে নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত থানা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক নয়ন ও সদস্য সচিব ফজলুকে কমিটিতে রাখা হয়নি।
পদবঞ্চিতদের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম বলেন, যুবদলে নেতৃত্বে আসার মতো অনেক যোগ্য নেতা রয়েছে। এদের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি যোগ্য, রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের অবদান রয়েছে, যারা ত্যাগী- তাদের দিয়ে সমন্বয় করে গত ৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণের অধীন চারটি থানা ও সাতটি ওয়ার্ড শাখা যুবদলের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুতরাং এসব কমিটি নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করলে তা পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, টাকা কিংবা অন্য কোনো উপঢৌকন নিয়ে কমিটি করার কোনো প্রমাণ, ডকুমেন্ট কারও কাছে থাকলে তাদের বলব- সেটা যেন তারা সুনির্দিষ্টভাবে পার্টির কাছে সাবমিট করেন।
মতিঝিল থানার অধীন ১০নং ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব সাজিদ খানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের এই আহ্বায়ক বলেন, সাজিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সাজিদ তার সাথেই ছাত্রদল করেছে বলে দাবি এনামের।
পদবঞ্চিত অনেকের সাথে যোগাযোগ হয়েছে জানিয়ে খন্দকার এনামুল হক এনাম বলেন, আংশিক আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। ফলে যারা বাদ পড়েছেন যোগ্যতা অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওয়ার্ডে কেউ বাদ পড়লে তাকে থানা কমিটিতে আনা হবে, থানায় বাদ পড়লে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মোট কথা যোগ্য-ত্যাগী কেউ-ই বাদ পড়বে না।
মন্তব্য করুন