সারা দেশের সর্বত্রই দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। রোববার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল-২০২৩ পাসের আলোচনায় বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম ও জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। তাদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে দুর্নীতি বেড়েছে এটি স্বীকার করে নেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, একটি বিষয়ে তারা (আলোচনায় অংশ নেওয়া সংসদ সদস্য) সবাই একমত, আমিও তাদের সঙ্গে একমত। সারা দেশের সর্বত্র, অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা পূর্বের তুলনায় বেড়েছে। তুলনা বলতে আনুপাতিক হারে। যে পরিমাণ সরকারি টাকা ৩০-৪০ বছর আগে ব্যয় হতো, বর্তমানে তার তুলনায় ২-৩-৪ গুণ বেশি ব্যয় হচ্ছে। ফলে সুযোগ-সুবিধা... চুরির সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে আমি বলব। এটা জাতীয় সমস্যা।
এর আগে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এখন টেন্ডারবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তাতে রাষ্ট্রের কোনো লাভ হয়নি। এক শ্রেণির আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ বর্তমান টেন্ডারব্যবস্থাকে নিরাপদ মনে করে এবং এর আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। এর অনেক উদাহরণ আছে, পর্দা কেনা, বালিশ কেনা...।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, এ আইনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল টেন্ডারবাজি বন্ধ করা। এতে কিছু ভালো হয়েছে। কিছু খারাপ দিকও হয়েছে। আগে ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ দুর্নীতি হত। আর এখন ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ কাজ হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ দুর্নীতি হয়।
সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ)’ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথোরিটি বিল–২০২৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।
রোববার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিলটি পাসের জন্য জাতীয় সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাইবাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) বিলুপ্ত হবে। বিপিপিএর ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তবে সরকার চাইলে সদস্যসংখ্যা বাড়াতে কমাতে পারবে। পরিকল্পনামন্ত্রী হবেন এই কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। আর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কাউকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে সরকার। এই কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকবে। বিপিপিএ তার কাজ সম্পাদনের জন্য যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে।
মন্তব্য করুন