ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, দেশের সামাজিক অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সামাজিক অবক্ষয় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পারিবারিকবন্ধন ভেঙে যাচ্ছে। আর এসবই বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামের কুফল। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভিনদেশি নির্ভরতা করে গড়ে তোলায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, চলমান শিক্ষা থেকে আল্লাহ ও রাসূল সা. এবং ইসলামী মনীষীদের জীবনী তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষার পরিবর্তে কুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে দিতে পারি না। তিনি শিক্ষার সকল অসঙ্গতি সংশোধনের দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১৩ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে ও মুফতি ফরিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন আবু ইউসূফ, মুহাম্মাদ নাসিম খান, মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম নাইম, সূধী সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, ডা. মুজিবুর রহমান, এবিএম রাকিবুল ইসলাম, মুফতি আরমান হুসাইন, হাফিজুল হক ফাইয়াজ প্রমুখ।
মুফতি রেজাউল করিম বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত লিঙ্গ বিকৃতির মতবাদ আমাদের সন্তানদের মূলত সমকামিতার মতো অনৈতিকতার দিকে ঠেলে দেবে। এসব অপ্রয়োজনীয় ও আপত্তিকর বিষয়াদি পাঠ করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম নৈতিকতা বিবর্জিত নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠবে, যা জাতির জন্য অশনি সংকেত। বর্তমান সরকারের ছত্রছায়ায় ট্রান্সজেন্ডারকে প্রমোট করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের নামে ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সরকার দেশের শিক্ষা কারিকুলামে ধর্মীয় ও দেশীয় ঐতিহ্য বিরোধী ব্যাপক পরিবর্তন করেছে। নৈতিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় ও সংস্কৃতি চেতনা বিলোপ করে সেখানে শিশু শ্রেণি থেকে নাচ-গান ও শিল্পের নামে অশ্লীলতা শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। শিক্ষার মাধ্যমেই জাতির ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে ওঠে। অথচ দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে জাতীয় আদর্শ ও জাতিসত্তা বিরোধী শিক্ষানীতির অবতারণা করা হয়েছে। এ শিক্ষায় মেধাহীন বিজ্ঞানবিমুখ জাতি গড়ে উঠবে।
চরমোনাই পীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে লুটপাট করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। ব্যাংক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার নেই, টাকা নেই। সরকারের কাছেও টাকা নেই। প্রহসনের ডামি নির্বাচনের পর ডামি সরকার দেশে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে। এ অবস্থা বহাল রেখে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। প্রহসনের ডামি নির্বাচন বাতিল করে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করেন তিনি।
এদিকে ১৫-২৯ ফেব্রুয়ারি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশব্যাপী দাওয়াতী পক্ষ পালন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দাওয়াতী পক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। দাওয়াতী পক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন দলের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
মন্তব্য করুন