কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
১২ দলীয় জোটের সমাবেশে বক্তারা

‘সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন চলবে’

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

ক্ষমতাসীন সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। লাগামহীন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম না কমালে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেয় জোটের নেতারা।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে জোটের শীর্ষ নেতারা এই আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নানাভাবে শোষণ করছে। তারা আমাদের মূল্যবান ইলিশ মাছ নিয়ে যায়। তারা আমাদের থেকে শুধু নিয়ে যাচ্ছে। করিডোর দিয়েছি, ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছি। বিনিময়ে তারা সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। ফেলানীর লাশ উপহার দিয়েছে। তিস্তার পানি আটকে রেখেছে। তারা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ হচ্ছে একটি অশুভ দেশ।

তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে প্রতিবেশী দেশ না কি সহায়তা করেছিল। কিন্তু কোনো আসল বন্ধু তো এমন খারাপ আচরণ করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের স্বার্থে বাংলাদেশের পাশে ছিল। বিনিময়ে অসংখ্য সম্পদ লুট করেছে। এসবের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক সবাইকে সম্মিলিতভাবে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। একইসঙ্গে পণ্য বর্জন করতে হবে।

জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, প্রতিবেশী দেশ আমাদের বাংলাদেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করেছে। সিকিম বানানোর চক্রান্ত চলছে। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাখির মতো গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিয়েছে। তারা কখনও বাংলাদেশকে সিকিম হতে দিবে না। ইনশাআল্লাহ আমরা সবাইকে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আগ্রাসন প্রতিরোধ করব। আমাদের আন্দোলন চলছে এবং অব্যাহত থাকবে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে প্রতিবেশী দেশের আগ্রাসনে বাংলাদেশের বৃহত শিল্প, চিনি শিল্প, চামড়া শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব তাদের পণ্য বর্জনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি করুন। সেইসঙ্গে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, কোনো ভিন দেশের তাবেদারী আমরা মানিনা। মানব না। সেইসঙ্গে রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে রমজান মাসেও আন্দোলন চলবে, ঠেকানো যাবে না। এ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান বলেন, গত ৭ জানুয়ারি একটি পাতানো নির্বাচনে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তারা মূলত প্রতিবেশী দেশর সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসেছে। প্রতিবেশী দেশ যে প্রেসক্রিপশন দেয় সে মোতাবেক আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়। এটা একটা পুতুল সরকার। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার ফেরাতে আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের আসল স্বাধীনতার স্বাদ ফিরিয়ে আনতে চাই। ছাত্রলীগের নেতারা কর্তৃক বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও অন্যায় কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির জানান তিনি।

রাশেদ প্রধান বলেন, আন্দোলন শেষ হয় নাই। নতুনভাবে সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবেশী দেশের আগ্রাসন মানবে না। এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের কাঁধের ওপর দিয়ে যায় ইলিশ মাছ ও শাড়ি। বিনিময়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের কাঁধে তুলে দিচ্ছে লাশের কফিন। এই হলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার নমুনা। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা কারও হাতে তুলে দিতে পারি না। প্রতিবেশী দেশের সরকার আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে গণতন্ত্রবিহীন সরকার বব্যবস্থা কায়েম করেছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা সবাই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। তাদের পণ্য কিনব না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব ইনশাআল্লাহ।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টি একাংশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দিন পারভেজ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জাকির হোসেন, কল্যাণ পার্টির আবু হানিফ, লেবার পার্টির শরিফুল ইসলাম, জাতীয় দলের আবুল মনসুর ভুইয়া, ছাত্র জমিয়তের আল-আদনান প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিলেন জয়

খাঁচায় বন্দি রেখে পাখি পালন করা কি জায়েজ আছে?

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর যুবকের কাণ্ড

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

নদীতে ভাসছিল নিখোঁজ চালকের মরদেহ, উধাও অটো

টাইফয়েড টিকার রেজিস্ট্রেশন মোবাইল থেকে যেভাবে করবেন

দুদকের দুই উপ-পরিচালক বরখাস্ত

দলের স্বার্থে খেলে কপাল পুড়ল দুই ক্রিকেটারের, দাবি অশ্বিনের

মহাখালীর সাততলা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন 

আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১২টা হাতি মরে গেছে : রিজওয়ানা

১০

প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

১১

ঢাবির ১৮ হল সংসদের প্রার্থী ঘোষণা ছাত্রদলের

১২

স্টার্টআপে বিনিয়োগ ও পরামর্শ দেবে কমিউনিটি ব্যাংক

১৩

মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

১৪

কুমিল্লায় ৫২টি পাসপোর্টসহ দালাল আটক

১৫

টাকা ছাড়াই খাওয়া যায় যে ক্যাফেতে, দিতে হবে প্লাস্টিক বর্জ্য

১৬

বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির ২য় প্রতিবেদন পেশ

১৭

হাসপাতালে গিয়ে মির্জা ফখরুলকে পেলেন না জামায়াতের প্রতিনিধিদল

১৮

দূরশিক্ষা ও বিজ্ঞানের মহীরুহ ড. শমশের আলীর মহাপ্রস্থান : এক জ্ঞানতাপস

১৯

একযোগে এনসিপির ১৫ নেতার পদত্যাগ

২০
X