ব্রাজিলের ফুটবল এখন মাঠের বাইরের এক ভয়ানক ঝড়ে কাঁপছে। মাত্র একদিন আগেই আদালতের নির্দেশে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সভাপতি এডনালদো রদ্রিগেজকে বরখাস্ত করা হয়। আর সঙ্গে সঙ্গেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এই রায় বাতিলের আবেদন করে সিবিএফ। কারণ? আন্তর্জাতিক ফুটবলে বহিষ্কারের শঙ্কা!
রিও ডি জেনেইরোর একটি আদালত এডনালদো রদ্রিগেজের দায়িত্ব পালনে নথিপত্রে অনিয়ম খুঁজে পান। বিশেষ করে প্রাক্তন সভাপতি কর্নেল নুনেসের স্বাক্ষর সংক্রান্ত এক চুক্তিতে গুরুতর অসঙ্গতি ধরা পড়ে। নুনেসকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হলেও তার আইনজীবী স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে যান। ফলে বিচারক গ্যাব্রিয়েল ডি অলিভেইরা জেফিরো সরাসরি রদ্রিগেজকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে সিবিএফ। সুপ্রিম ফেডারেল কোর্টে জমা দেওয়া আবেদনে সংস্থাটি দাবি করেছে, এটি ব্রাজিলের সংবিধান ও ফুটবলের স্বায়ত্বশাসনের বিরুদ্ধে এক ‘সরাসরি আঘাত’। এর ফলে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী ‘বাহ্যিক হস্তক্ষেপ’ হিসেবে ধরা পড়তে পারে বিষয়টি, যার ফল হতে পারে নিষেধাজ্ঞা কিংবা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ার মতো চরম শাস্তি।
অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে ফার্নান্দো হোসে সারনের নাম ঘোষণা করলেও, সেটিও চ্যালেঞ্জ করেছে সিবিএফ নিজেই! তারা জানিয়েছে, ফিফা ও কনমেবল (দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল সংস্থা) আদালতের মাধ্যমে নিযুক্ত কোনো কর্তৃপক্ষকে স্বীকৃতি দেয় না—শুধু অভ্যন্তরীণ অ্যাসেম্বলি বা নির্বাচনেই নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়।
পুরো সংকটের পেছনে রয়েছে আরও একটি বড় প্রেক্ষাপট—জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কার্লো আনচেলত্তির আগমন। ইতোমধ্যে চুক্তি সম্পাদনের চূড়ান্ত মুহূর্তে থাকা আনচেলত্তির নিয়োগও এখন অনিশ্চয়তায়, কারণ বর্তমান সঙ্কটের মধ্যে ‘বৈধ স্বাক্ষরকারী’ কে, তা নিয়েই রয়েছে জটিলতা।
একদিকে ব্রাজিল ফুটবলে নতুন যুগের সূচনার আশা, অন্যদিকে নেতৃত্ব নিয়ে বিচারালয় ও ফিফার দ্বন্দ্ব—ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এ সংকট বিশ্ব ফুটবলেই নতুন অনিশ্চয়তা ডেকে আনতে পারে। এখন দেখার, সুপ্রিম কোর্ট কোন পথে হাঁটে, আর ফিফা কেমন প্রতিক্রিয়া জানায়।
মন্তব্য করুন