২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে শেষ আট থেকে বিদায় নেয় আসরের অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিল। টুর্নামেন্টে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিলেও বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। যা সহজে মেনে নিতে পারেননি সেলেসাও ফুটবলের ভক্তরা।
এবার আসরটি শেষ হওয়ার দুই বছর পর জানা গেল সেলেসাও তারকা ফুটবলার রিচার্লিসনও ভক্তদের মতো অবস্থায় ছিলেন। এমনকি সেসময়ে ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের অবস্থা এতটাই খারাপের দিকে গিয়েছিল যে নিজের জীবন শেষ করার কথা পর্যন্ত ভেবেছিলেন তিনি।
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সেলেসাওদের ছিটকে যাওয়ার পর নিজের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে কথা বলেন রিচার্লিসন। অবস্থা কতটা খারাপ ছিল সম্প্রতি তারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টটেনহ্যামের এই স্ট্রাইকার। নিজেদের সেরা ছন্দে থাকার পরেও একেবারে কাছে এসে এভাবে বিদায় নেয়াটা কোনোভাবেই মানতে পারেননি রিচা। তাই বেশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি এবং একপর্যায় ফুটবল ছাড়া থেকে শুরু করে আত্মহত্যাও করতে চান এ ফুটবলার। ইএসপিএন ব্রাজিলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান তিনি।
হতাশা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলো যে জানান, ওই সময়ে খেলাই ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। রিচার্লিসন বলেন, ‘অনুশীলনে যাওয়ার আগে আমার মনে হতো, বাড়ি ফিরে যাওয়াই ভালো। বাড়িতে ফিরে গিয়ে নিজের ঘরে বসে থাকতে ইচ্ছে হতো আমার… জানি না মাথার ভেতর কী চলছিল। এমনকি বাবার কাছে গিয়েও বলেছি, আমি (খেলা) ছেড়ে দিতে চাই।’
এ ছাড়াও গুগলে মৃত্যু নিয়ে খোঁজখবরও করছিলেন তিনি। সে সময় মৃত্যু নিয়ে বাজে ভাবনায় ডুবে যাওয়ার কথাও বলেছেন এ ব্রাজিলিয়ান।
‘বিশ্বকাপের পর যেসবের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি… বাবার সঙ্গে এসব কথা বলা ছিল খুবই দুঃখজনক। যে ছিল আমার পথচলার সঙ্গী এবং একসঙ্গেই স্বপ্নটাকে তাড়া করেছি আমরা… তার কাছে গিয়ে বলা, বাবা, আমি (খেলা) ছেড়ে দিতে চাই… পুরো পাগলাটে ব্যাপার ছিল এটা।’
এমন পরিস্থিতিতে মনোবিদের কাছে যাওয়া সেরা সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানান তিনি।
রিচার্লিসন বলেন, ‘থেরাপিস্ট তখন আমাকে বাঁচিয়েছে… পছন্দ করুন আর না করুন, আমার জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি। তখন আমি স্রেফ আজেবাজে কথাই ভেবেছি…।’
তিনি বলেন, ‘কারও যদি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে হয়, তাহলে যাওয়া উচিত, কারণ কারও কাছে এভাবে খোলামেলা হওয়া, মন খুলে কথা বলা, এসব খুবই জরুরি এই সময়ে।
মন্তব্য করুন