যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সরকারি সংস্থা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন) ওয়েবসাইট থেকে কী পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছিল, তা জানা যায়নি। তথ্য ফাঁসের ঘটনার তদন্তেও তা আসেনি। এ ছাড়া এ ঘটনায় কোনো শাস্তির ব্যবস্থাও নেওয়া হবে না।
সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এই সভা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি। সভা শেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ ৭ জুলাই এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশে একটি সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে। টেকক্রাঞ্চ প্রতিবেদনটি করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মারকোপোলোসের বরাত দিয়ে। সেই প্রতিবেদনে ৫০ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
কত মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কত মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে, তা জানা যায়নি। আর্কিটেকচারের দুর্বলতা ছিল। লগবুক ছিল না।
তিনি আরও বলেন, ৫০ লাখ মানুষের তথ্য যে উন্মুক্ত ছিল, তা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ৫০ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে কি না, সেটা অসত্য বলেও ধরা যাচ্ছে না, আবার মিথ্যাও বলা যাচ্ছে না।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, এই তথ্যগুলো ডার্ক ওয়েবে এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তথ্য কেউ হ্যাক করে নিয়ে গেছে, এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনে শাস্তি দেওয়ার কোনো সুপারিশ করা হয়নি। এতে দায়মুক্তির সংস্কৃতি তৈরি করবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, তা করবে না। নিজেদের দায়িত্বটা যেন নিজেরা পালন করে, এ ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রীকে এই সুপারিশ পাঠানো হবে।
পুলিশি মামলা বা তদন্ত হবে কিনা, জানতে চাইলে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটি বিভাগ সেদিকে যাবে না। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান অথবা পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে পারে। সুপারিশেও মামলার বিষয় নেই।
জুনাইদ আহমেদ বলেন, যাদের প্রতিষ্ঠানে তথ্য উন্মুক্ত ছিল, তাদের দোষী করতে চাননি। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এবার বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে যে এ ধরনের ঘটনা আবার ঘটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোকে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির গাইডলাইন অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন