সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণের পর আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ভোটাররা। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন উদারপন্থি লি জে মিয়ং।
এবার তারই নিদর্শন দেখালেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং। দেশজুড়ে নাগরিকদের সরাসরি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন তিনি।
জনগণের সার্বভৌমত্ব ও অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে তিনি ‘পাবলিক রেফারেল সিস্টেম’ নামে এই অভিনব উদ্যোগ চালু করেছেন।
বুধবার (১১ জুন) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন উদ্যোগে ১০ থেকে ১৬ জুনের মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্য, উপমন্ত্রী বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জন্য প্রার্থী সুপারিশ করতে পারবেন ১৪ বছর বা এর বেশি বয়সী দক্ষিণ কোরিয়ার যেকোনো নাগরিক।
এ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের নাম, যোগাযোগের তথ্য, দক্ষতার ক্ষেত্র ও মনোনয়নের কারণসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়া যাবে প্রেসিডেন্টের সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল অথবা কর্মী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে। চাইলে নিজেকেও মনোনয়ন দেওয়া যাবে।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেন, ১৪ বছর বা তার বেশি বয়সী যেকোনো দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য উন্মুক্ত এই উদ্যোগ ‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’ এবং আরও অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা প্রচারের জন্য লির প্রচেষ্টার অংশ।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) ফেসবুক একটি পোস্ট করেন প্রেসিডেন্ট লি। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সত্যিকারের গণতন্ত্র শুরু হয় যখন নাগরিকরা তাদের সার্বভৌমত্ব চর্চা করে, অংশ নেয় এবং পরিবর্তন আনে।’
জানা গেছে, সাধারণ মানুষের সুপারিশে প্রাপ্ত মনোনয়নগুলো জাতীয় মানবসম্পদ ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করা হবে এবং একটি অভ্যন্তরীণ যাচাই-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হবে। এই যাচাই-প্রক্রিয়ায় সিভিল সার্ভিস শৃঙ্খলা বিভাগের সচিব ও উন্মুক্ত মূল্যায়ন-প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই উদ্যোগ ছিল প্রেসিডেন্ট লির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর একটি। তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন করার পরিকল্পনাও এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক নাগরিকের পরামর্শ থেকে।
এদিকে ১০ জুন অর্থনীতি, পররাষ্ট্র ও শিল্প খাতে ছয়জন নতুন উপমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন লি জে মিয়ং—যা তার প্রস্তাবিত পাবলিক রেফারেল সিস্টেমের বাইরেই হয়েছে। উপমন্ত্রীর ক্ষেত্রে সংসদীয় শুনানির প্রয়োজন পড়ে না।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট লি বর্তমানে অভিশংসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নিয়োগ দেওয়া মন্ত্রীদের সঙ্গেই কাজ করছেন। ইউন গত ডিসেম্বরে মার্শাল ল’ ঘোষণা করার চেষ্টা করায় সাংবিধানিক আদালত তাকে অপসারণ করেন।
মন্তব্য করুন