বিশ্ব রাজনীতির শক্তির ভারসাম্যে নাটকীয় মোড়। চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে শি জিনপিংয়ের কাছে নতজানু ট্রাম্প। যুগের পর যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি সে ধারার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। অর্থনৈতিক প্রভাব, বাণিজ্যিক কৌশল ও বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারের দৌড়ে চীন এখন এক বিশাল শক্তি হিসেবে আবির্ভূত।
শি জিনপিংয়ের কৌশলী নেতৃত্বে চীন যেভাবে অর্থনীতির দখল নিয়েছে, তাতে বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চীনের উত্থান ঠেকাতে পারেনি; বরং অনেকক্ষেত্রে মাথানত করতে হয়েছে।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশ্বব্যাপী শুল্কারোপ তারই প্রমাণ। প্রতিটি দেশের ওপর ট্রাম্প যখন উচ্চ শুল্কারোপ করেন অন্যান্য দেশ দেনদরবার করতে বসেন ট্রাম্পের সঙ্গে। কিন্তু সেদিক থেকে আলাদা চীন। ট্রাম্পের এই পাগলামি মেনে না নিয়ে উল্টো বেঁকে বসে বেইজিং।
প্রতিশোধ নিতে বেইজিংও শুল্ক আরোপ করে। এতে আরও চটে যান ট্রাম্প। একে অপরের ওপর পাল্টা আক্রমণের কারণে শুল্ক তিন অঙ্কে পৌঁছায়। সর্বশেষ ওয়াশিংটন চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক ধার্য করে, পাল্টায় মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীন।
উপায় না পেয়ে আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব আসে মার্কিন মুলুক থেকে। দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে নতুন শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন তারা। সেই স্থগিতাদেশ শেষ হয়েছে ১২ আগস্ট।
তবে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এক নির্বাহী আদেশে চীনের ওপর শুল্ক বিরতি আরও তিন মাস বাড়াতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মে মাসের ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর থাকবে, অন্যদিকে চীনের বাজারে মার্কিন পণ্যের ওপর কার্যকর থাকবে ১০ শতাংশ শুল্ক।
বিরতির প্রথম মেয়াদে অর্থাৎ মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ছিল। ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ৯০ দিন এ শুল্কই কার্যকর থাকবে।
মন্তব্য করুন