কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঈদের দিনে গাজায় ইসরায়েলের হামলা, ৫ শিশুসহ নিহত ২০

স্বজনের কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি : সংগৃহীত
স্বজনের কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনারা বোমা হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (৩০ মার্চ) গাজা উপত্যকায় ঈদ উদযাপনের সময় বোমা বিস্ফোরণ এবং কামানের গোলার আওয়াজে ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার আর্তনাদ চাপা পড়ে গেছে। এই বছরের ঈদ পুরোপুরি ভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করেছে, যেখানে উৎসবের পরিবর্তে ধ্বংস, দুঃখ এবং মৃত্যুর মিছিল চলছে।

গাজার মধ্যাঞ্চলের আল মাওয়াসি এলাকায় স্থানীয় সময় রোববার সকালের দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান থেকে গুলি চালানো হয়। আল জাজিরার সংবাদদাতা তারেক আবু আজজুম জানিয়েছেন, আমি এই মুহূর্তে ইসরায়েলি বিমান থেকে গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি। দেইর আল বালাহর পূর্বাঞ্চলে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তিনি জানান, মাত্র ৩০ মিনিট আগে দেইর আল বালাহ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের আল মাওয়াসি এলাকায় একটি শিবিরে হামলা চালানো হয়, যেখানে শিশুসহ ৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

এছাড়া, সংবাদদাতা আরও জানান, হামলায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের সবাই প্রাণ হারিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই এলাকা মানবিক নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল, তবে তা সত্ত্বেও এই হামলা চালানো হয়।

ফিলিস্তিনিরা এই ঈদে তাদের প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে অন্তত কিছুটা শান্তি খুঁজছে। অনেকেই তাদের প্রিয়জনদের হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য এই দিনটি পালন করছেন। ঈদ উদযাপনের জন্য সাধারণত যে আনন্দ এবং উল্লাস থাকে, রোববার তা গাজায় অনুপস্থিত ছিল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের দিন যে শিশুরা নতুন পোশাক পরত, তারা এখন ক্ষুধার্ত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নেই, উৎসবের খাবারও নেই।

গাজার বাসিন্দারা এখন নিজের ঘর-বাড়ি হারিয়ে, পরিবারকে হারিয়ে, তাদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ঈদের দিনে গাজার বসতিগুলো ধ্বংস করে চলেছে, আর এতে তাদের ঘরবাড়ি ও প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রার সামগ্রী হারিয়ে যাচ্ছে।

ঈদের উৎসবের পরিবর্তে গাজার অনেক মানুষ তাদের প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করেছেন, এমন এক শোকাবহ পরিবেশে। আল আকসা হাসপাতালের মর্গে এক মায়ের দৃশ্য ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক, যিনি শনিবার ইসরায়েলি হামলায় তার স্বামীকে হারিয়ে নিজের মেয়েকে নিয়ে স্বামীর লাশের বিদায় জানাতে এসেছিলেন।

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের এই নির্মম দুর্দশার কোনো শেষ নেই। ঈদ সেখানে শুধু এক ভয়াবহ বাস্তবতা হয়ে উঠেছে, যেখানে মৃত্যুর মিছিল, ক্ষুধা এবং ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৫ দিনেও হয়নি সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা

যুদ্ধবিরতির পর নিহতের নতুন সংখ্যা জানাল ইরান

সিটিকে বিদায় করে ক্লাব বিশ্বকাপে আল হিলালের বড় অঘটন

ডেঙ্গু জ্বর: কিছু তথ্য

এইচএসসিতে প্রশ্নপত্র নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা

জুলাই অভ‍্যুত্থান : মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

৪৪তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম ফরহাদ

‘দুঃখিত, এবার আর তা হবে না’

‘কূটনীতির দরজা কখনো পুরোপুরি বন্ধ হয় না’

তেলের দামে বড় পতনের আভাস

১০

এসএসসি পাসেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে চাকরি

১১

৩২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, বাবা-ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১২

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি / রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রসমাবেশ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা

১৩

ইরানের কমান্ডার কানি গুপ্তচর কি না, জানাল মোসাদ

১৪

যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি

১৫

চাল না কিনলে জাপানে নতুন করে শুল্কের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

১৬

হলি আর্টিসান হামলার আজ ৯ বছর

১৭

সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ

১৮

কারাগারে যেমন কাটছে মমতাজের

১৯

পাকিস্তানে একযোগে হামলা চালাতে চায় ভারত-ইসরায়েল

২০
X