ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের পর বর্তমানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। যদিও শুরুর দিকেই এ যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা টিকেই আছে। উভয়পক্ষ আপাতত আক্রমণাত্মক অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তবে এই শান্ত অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার মূল বিষয় থাকবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং এই কর্মসূচির ভবিষ্যৎ। ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে তেহরান।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কাছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যভান্ডার’ রয়েছে। সংস্থাটির দাবি, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সাম্প্রতিক হামলায় ‘গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ জানিয়েছেন, ইরানের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এসব স্থাপনা নতুন করে নির্মাণ করতে বহু বছর সময় লাগবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর থেকেই একটি প্রাথমিক গোয়েন্দা মূল্যায়ন ফাঁস হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি হয়তো মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা মাস পিছিয়েছে। এই মূল্যায়নকে চ্যালেঞ্জ করেছে ইসরায়েল। তারা দাবি করেছে, ইরানের কর্মসূচি ‘গভীর, বিস্তৃত ও ধ্বংসাত্মক’ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তা কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে।
অন্যদিকে ইরানের পার্লামেন্ট জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করতে একটি বিল পাস করেছে। বিলটি এখন দেশটির ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে ভবিষ্যতে আইএইএ ইরানে পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পরিদর্শন চালাতে পারবে না, যদি না ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ অনুমতি দেয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি থাকলেও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের আলোচনার ফলাফলই নির্ধারণ করবে সামনের কূটনৈতিক চিত্র—এটা কি সত্যিকারের শান্তি আনবে, নাকি আবারও সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবে, তা সময়ই বলে দেবে।
সূত্র : এবিসি নিউজ
মন্তব্য করুন