প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। গেল এক মাসে ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। যার সিংহভাগই সাধারণ নাগরিক। যার হাত গাজাবাসীর রক্তে রঞ্জিত, সেই নেতানিয়াহু এবার বড় ধরনের বিপদে রয়েছে।
ইসরায়েলিরা শুধু মারতে জানে, এই মিথকে ভুল প্রমাণ করে, ৭ অক্টোবর দেশটিতে বড় ধরনের হামলা চালায় হামাস। কয়েক ঘণ্টার হামলায় দেশটিকে ধ্বংস্তূপে পরিণত করে তারা। ওই ব্যর্থতার জেরে প্রবল চাপ আসে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর। কিন্তু তাৎক্ষণিক চাপ সামলাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু হামাসের সূক্ষ্ম কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হন নেতানিয়াহু।
ওই হামলার সময় দুইশরও বেশি ইসরায়েলিকে আটক করে গাজায় নিয়ে আসেন হামাস যোদ্ধারা। এসব বন্দিই নেতানিয়াহুর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ এক মাসেও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি নেতানিয়াহু প্রশাসন। এই ব্যর্থতার জেরে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে দেশটির পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন জিম্মিদের স্বজনরা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারা জানান, নেতানিয়াহু যতক্ষণ পদত্যাগ না করবেন, ততক্ষণ সেখান থেকে সরবেন না তারা।
হামাসের হামলার পর নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অক্টোবরে আন্তর্জাতিক সংবাদিকদের জন্য প্রেস ব্রিফিংয় করেন নেতানিয়াহু। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়- ৭ অক্টোবরের হামলায় তার ওপর চাপ বাড়ছে, হু হু করছে কমছে জনপ্রিয়তা। এমন পরিস্থিতিতে তিনি পদত্যাগ করবেন কি না? জবাবে পদত্যাগের দাবি উড়িয়ে দেন নেতানিয়াহু।
কট্টর ডানপন্থি এই নেতা তখন বলেছিলেন, তিনি হামাসকে পদত্যাগ করাবেন অর্থাৎ গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করবেন। যুদ্ধের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে সুসংহত করতে চাওয়া এই প্রধানমন্ত্রী জানান, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি করবে না তার দেশ। বলেন, তাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি করা মানে, আত্মসমর্পণ করা।
গেল এক মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। যাদের বেশির ভাগাই নারী ও শিশু। চলমান এ যুদ্ধে এত বেশি সংখ্যক শিশু নিহত হওয়ায়, গাজাকে ‘শিশুদের জন্য গোরস্থান’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস।
মন্তব্য করুন