

জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে আরেক দেশ। এ বিক্ষোভে অন্তত দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। এক মেয়রের মৃত্যু ঘিরে মেক্সিকোতে প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা একাধিক শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, মেক্সিকো সিটিতে জেন-জির ডাকা বিক্ষোভে অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ কর্মকর্তা। শনিবার হাজারো মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে সহিংস অপরাধ ও প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ক্রমে অন্যান্য শহরেও একই ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। শেইনবাউম দাবি করেছেন, এসব বিক্ষোভ ডানপন্থি রাজনীতিকদের অর্থায়নে সংগঠিত হয়েছে, যারা তার সরকারের বিরোধিতা করছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে জেন-জির তরুণ সংগঠনগুলো। সম্প্রতি আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে উরুয়াপানের মেয়র কার্লোস মানজোর হত্যার পর জনরোষ আরও তীব্র হয়। মানজো প্রকাশ্যে কার্টেল ও সশস্ত্র পাচারচক্র নিয়ে কথা বলতেন এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাতেন। ১ নভেম্বর ‘ডে অব দ্য ডেড’ উৎসবে যোগদানকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
বিক্ষোভকারীরা ‘আমরা সবাই কার্লোস মানজো’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নামেন। কেউ কেউ মেয়রের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাউবয় হ্যাটও পরেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসকে রক্ষার জন্য স্থাপন করা ব্যারিকেডের অংশ ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। শেইনবাউমের সরকারি আবাসস্থল হওয়ায় এলাকাটি ছিল বিশেষ সুরক্ষায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারগ্যাস ছোড়ে।
মেক্সিকো সিটির নিরাপত্তা প্রধান পাবলো ভাসকেজ জানান, লুটপাট, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভের আগে প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেন যে, অনলাইন বট ব্যবহার করে এসব বিক্ষোভ প্রচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, যুবকদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন কে সংগঠিত করছে? জনগণের জানা জরুরি যেন তারা ব্যবহৃত না হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, দায়িত্বের প্রথম বছরেই শেইনবাউমের জনসমর্থন ৭০ শতাংশের বেশি রয়েছে। ফেন্টানিল পাচারের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রশংসা পেয়েছে। তবে দেশব্যাপী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তিনি সমালোচিত হচ্ছেন। প্রতিবেশী দেশ পেরুর সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে পেরুর কংগ্রেস শেইনবাউমকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করে। এর আগে মেক্সিকো এক অভিযুক্ত সাবেক পেরুভিয়ান প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
মন্তব্য করুন