ইরানের ওপর সামরিক হামলা চালায় ইসরায়েল। শুক্রবার (১৩ জুন) এ হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাই ছিল মূল লক্ষ্যবস্তু। ইসরায়েল দাবি, ইরান দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে, যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে শনিবার (১৪ জুন) এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
এই হামলার পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সমর্থন জানান। এর ফলে ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।
সমর্থকদের মধ্যে বিভাজন
ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে কিছু অংশ ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন জানিয়েছে, তবে অনেকেই এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কনজারভেটিভ রাজনৈতিক বিশ্লেষক টাকার কার্লসন বলেছেন, ‘ইসরায়েল যদি যুদ্ধ করতে চায়, তারা তা করতে পারে, কিন্তু আমেরিকার সমর্থন ছাড়া।’
রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পলও এই মতামত প্রকাশ করেছেন যে, ‘আমেরিকান জনগণ যুদ্ধের বিপক্ষে এবং তারা ২০২৪ সালে ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে এটি প্রমাণ করেছে।’
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার সময় বলেছিলেন যে, তিনি সব যুদ্ধ বন্ধ করবেন এবং ‘শান্তির দূত’ হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু ইসরায়েলের হামলার পর, তার এই প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের হামলায় সরাসরি জড়িত নয়। তবে হামলার আগে তারা অবহিত ছিল।
কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চেয়েছিলেন, কিন্তু ইসরায়েলের চাপের কারণে তিনি সামরিক পদক্ষেপের দিকে ঝুঁকেছেন।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ইরান এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। মার্কিন প্রশাসন ইরানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়, তবে ইসরায়েলের পদক্ষেপ এই প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্পের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ তাকে তার সমর্থকদের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কও বজায় রাখতে হবে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার সমর্থকদের মধ্যে বিভাজন, ইরানের প্রতিশোধের হুমকি এবং আন্তর্জাতিক চাপ তাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। ভবিষ্যতে, এই পরিস্থিতি কিভাবে এগিয়ে যায়, তা ট্রাম্পের কৌশল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে।
মন্তব্য করুন