ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমানের হামলার ঘটনায় মার্কিন রাজনীতিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই একে সংবিধান লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, আবার কেউ কেউ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। চলুন জেনে নিই কে কী বলছেন—
বার্নি স্যান্ডার্সের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এ হামলাকে মার্কিন সংবিধানের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই মাত্র যে খবর পেলাম, সেটি উদ্বেগজনকই নয়; বরং চরমভাবে সংবিধানবিরোধী। সবাই জানেন, যুদ্ধ ঘোষণা করার অধিকার শুধু মার্কিন কংগ্রেসের রয়েছে, প্রেসিডেন্টের নয়।’
ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান
ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতারা এখনো সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক ককাস নেতা হাকিম জেফরিজ এবং সিনেটের নেতা চাক শুমার—দুজনই নীরব আছেন। উভয়েই ইসরায়েলের জোরালো সমর্থক হিসেবে পরিচিত এবং ইরানবিরোধী কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
তবে আগের এক বিবৃতিতে হাকিম জেফরিজ বলেছিলেন, ‘ইরানকে কখনোই পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ইসরায়েলেরও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’ একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, কেবল কংগ্রেসেরই যুদ্ধ ঘোষণার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে।
এক জরিপ বলছে, ডেমোক্রেটিক সমর্থকদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিরোধী যুদ্ধে জড়ানোর বিরোধিতা করেছেন।
রিপাবলিকানদের প্রতিক্রিয়া
রিপাবলিকান নেতাদের মধ্যে অনেকেই ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা জন থুন বলেন, ‘ইরানের নেতারা শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। ট্রাম্প সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।’
হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, ‘এ হামলা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির বাস্তব প্রতিফলন। এতে আমাদের শত্রু ও মিত্রদের জন্য পরিষ্কার বার্তা গেছে—ট্রাম্প যা বলেন, তা করেন।’
সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এবং রজার উইকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেন, ইরান এখন যে হুমকি সৃষ্টি করছে, তা মোকাবিলায় এটি একটি সচেতন ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
তবে সব রিপাবলিকান একমত নন। কেনটাকির সিনেটর থমাস ম্যাসি বলেন, ‘এই হামলা সংবিধানসম্মত নয়।’ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি সারা জ্যাকবস বলেন, ‘এ পদক্ষেপটি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করছে এবং আমরা আরেকটি অন্তহীন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারি।’
কংগ্রেসওমেন রাশিদা তালিবের মন্তব্য
ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তালিব এই হামলার কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘আইনপ্রণেতাদের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইরানের ওপর হামলার নির্দেশ দেওয়া স্পষ্টভাবে মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।’
মন্তব্য করুন