শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
এহসান আব্দুল্লাহ
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৫, ০৭:৪১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাক্ষাৎকার

ডিভাইস ও সিম ট্যাক্স কমানো হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে

ডিভাইস ও সিম ট্যাক্স কমানো হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে

দেশে টেলিকম খাতের জন্য কেমন হলো এবারের বাজেট। কোথায় কোথায় নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন। এসব বিষয় নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার (সিসিআরও) সাহেদ আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এহসান আব্দুল্লাহ

কালবেলা: টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য এবারের বাজেট কেমন ছিল?

সাহেদ আলম: এবারের বাজেটে আমরা কিছুটা পজিটিভিটি দেখতে পেয়েছি। বেশ কিছু জিনিস আছে যেখানে টেলিযোগযোগ খাতের জন্য ভালো হবে; কিন্তু ডিভাইসে দাম কমানোর জন্য আমাদের প্রস্তাব ছিল, তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। আমাদের ডিভাইস পেনিট্রেশন না বাড়লে ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বাড়বে না। আমাদের ফোর-জি ডিভাইস পেনিট্রেশন ৫৫ শতাংশের মধ্যে আটকে আছে, যার কারণে স্মার্টফোন পেনিট্রেশন না বাড়ার কারণে ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বাড়ছে না। ডিভাইস সংযোজনের ক্ষেত্রে যেসব ট্যাক্স আছে, তা যদি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মওকুফ করে দেওয়া যেত; তাহলে ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বাড়ত। ফলে সরকারের রাজস্ব আরও বাড়ত। একটা আননেসেসারি ট্যাক্স আছে যেটা সিম রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপারেটররা ভর্তুকি দিয়ে আসছে। আমরা মনে করি এটা ডাবল ট্যাক্স। কারণ সিম কেনার সময়ই একবার ট্যাক্স দেওয়া হয়।

কালবেলা: প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল অপারেটর টার্নওভার কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করার সুফল কতটা পাওয়া যাবে?

সাহেদ আলম: মোবাইল অপারেটরদের জন্য টার্নওভার ট্যাক্স থাকা উচিত না। পৃথিবীর কোথাও এটা নেই। এর কারণে অপারেটরদের রেট অব রিটার্ন কমে আসে। ফলে ইফেক্টিভ ট্যাক্স চলে যায় ৭২ শতাংশে, এমনটা হলে ধারাবাহিক বিনিয়োগ কমে আসবে। সরকারের রেভিনিউও এ খাত থেকে বাড়বে না।

কালবেলা: কিছুদিন আগেই সরকার ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। বাজেটে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে গ্রাহক এর সুফল পাবে?

সাহেদ আলম: আমরা সরকারকে বলেছি, ইন্টারনেটের দাম কমানো সম্ভব। কিন্তু এর জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নিতে হবে। ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর ফলে দাম কমে আসবে, তবে এটি এখনই নয়। প্রথমে সিম ট্যাক্স ও কনজ্যুমার ট্যাক্স কমাতে হবে। এসব ট্যাক্স কমানো হলে গ্রাহক এর সুফল পাবে। ব্যান্ডউইথের দাম টোটাল ইন্টারনেট কস্টের খুবই সামান্য অংশ। এনটিটিএন পর্যায়ে দাম কমানোর সুফল মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে তেমন পাওয়া যায় না।

কালবেলা: সরকার অপারেটরদের ডার্ক ফাইবার ও ডিডব্লিউডিএম সুবিধা দিয়েছে। এতে অপারেটররা কীভাবে লাভবান হবে? গ্রাহকরা এর কী সুফল পাবে?

সাহেদ আলম: মোবাইল অপারেটরদের ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারের সুযোগ দেওয়াটা আসলে খুবই প্রয়োজন, এটাকে ঠিক সুবিধা বলা যাবে না। এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, বর্তমান সরকার সেটি আবার অনুমতি দিয়েছে। এ জন্য সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এতদিন অপারেটরদের ডার্ক ফাইবার না দেওয়ার কারণে টেলকো গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেনি। এখন এ বিষয়ে বলা হচ্ছে, এটা বর্তমান সরকারের ক্রেডিট। এটার কারণে কষ্ট কিছুটা কমলেও তা দীর্ঘমেয়াদে, তাৎক্ষণিক সুবিধা পাওয়া যাবে না।

কালবেলা: ইন্টারনেটের দাম না কমালে সরকার অপারেটরদের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয় ও সুবিধা পুনর্বিবেচনা করবে বলেছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

সাহেদ আলম: সরকারের এখতিয়ার আছে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আবার বিনিয়োগকারীদেরও সুযোগ আছে কোথায় বিনিয়োগ করলে রিটার্ন আসবে তা দেখার। এ নিয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই।

কালবেলা: গত এক বছরে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা কমছে। গ্রাহক বাড়াতে সরকারের কাছে কী ধরনের নীতি সুবিধা প্রত্যাশা করে অপারেটররা?

সাহেদ আলম: মোবাইল গ্রাহক বাড়ানোর জন্য প্রথম যে বাধা সেটি হচ্ছে সিম ট্যাক্স। এন্ট্রি লেভেলে বাধা দেওয়া হলে গ্রাহক বাড়বে না। গ্রাহক না বাড়লে সরকারের রাজস্ব বাড়বে না। এখানে সরকার কী চায় তা জানা দরকার।

কালবেলা: টেলিকম খাতের উন্নয়নে বাজেটে কী ধরনের সুবিধা থাকা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

সাহেদ আলম: আমরা মনে করি সিম ট্যাক্স পুরোপুরি তুলে দেওয়া উচিত, অথবা এটি কমিয়ে আনা উচিত। সরকার যদি এটি কমিয়ে দেয় তাহলে হয়তো এ খাতে রেভিনিউ কম পাবে, তবে অন্যান্য খাতে সরকার আরও বেশি রেভিনিউ পাবে।

কালবেলা: অপারেটরগুলোর গ্রাহক প্রতি আয় ক্রমেই কমছে। এটি কীভাবে বাড়ানো যায়?

সাহেদ আলম: এটার জন্য ডিভাইস পেনিট্রেশন বাড়াতে হবে। ডিভাইসের ওপর ট্যাক্স কমাতে হবে। ট্যাক্সগুলো স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। এগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাহলেই মোবাইল অপারেটরদের আয় ও সরকারের আয় দুটিই বাড়বে।

কালবেলা: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে রবির ভাবনা কী?

সাহেদ আলম: এআই নিয়ে রবি অনেক কাজ করছে। রবি গ্রাহকদের ব্যবহার ও বিভিন্ন অফার এআইর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে থাকে। এআই দিয়ে কোথায় কোথায় এফিশিয়েন্সি নিয়ে আসা যায় এবং কনজ্যুমারদের সমস্যার সমাধান দেওয়া যায়, সেগুলো নিয়ে কাজ করছে রবি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার দ্বারপ্রান্তে যে সাত দেশ

উত্তরা এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করল সেনাবাহিনী

ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদ কেন মাস্কের?

প্রতিক্রিয়ায় খেলাফত মজলিস / জনগণের প্রত্যাশা পূরণে বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ নিশ্চিত করুন 

সারাদেশে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর

নাইটহুড পাচ্ছেন ডেভিড বেকহ্যাম

রেমিট্যান্সে ট্রাম্পের কর প্রস্তাব, প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কার শঙ্কায় বাংলাদেশ-ভারত

এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না : নাহিদ 

শাহ্‌ সিমেন্টের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন হামজা

১৩২ হলে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’

১০

লোহার ফাঁকের ঈদ আনন্দ, কেরানীগঞ্জ কারাগারে মানবিক ছোঁয়া

১১

সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে অপপ্রচার, প্রতিবাদে রামুতে বিক্ষোভ

১২

নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করলেন তারেক রহমান

১৩

প্রতিক্রিয়া / সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চায় এবি পার্টি 

১৪

এশিয়া থেকে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত তিন দেশের

১৫

ঈদের নামাজের রাকাত ছুটে গেলে কী করবেন

১৬

কোরবানি জন্য যত টাকা দিয়ে খাসি কিনলেন উপদেষ্টা আসিফ

১৭

ভারত ইংল্যান্ডে হোয়াইটওয়াশ হলে টেস্টে ফিরবেন কোহলি!

১৮

প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে আর্থিক খাতের দায় 

১৯

নির্বাচনের সময় নিয়ে জামায়াতে আমির যা বললেন 

২০
X