প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বৈষম্যমূলক বিধান প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ভলান্টারি কনজ্যুমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা)। এ ছাড়া বাজেটের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে এসব সংশোধনের ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে ৯ দফা সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এসব সুপারিশ করে। লিখিত বক্তব্যে ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। একই সঙ্গে আয় দেখানো হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। বাজেটে সমস্যার স্বীকৃতি থাকলেও তা থেকে উত্তরণে দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে পণ্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় হ্রাস ইত্যাদি বাস্তবতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
তবে উচ্চমূল্যস্ফীতির সময়ে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা ইতিবাচক। খলিলুর রহমান সজল বলেন, সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি প্রশংসনীয়। তবে প্রাপ্তির বিষয়টি স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক হতে হবে। সেইসঙ্গে গড় আয়ু বিবেচনায় ৬০ বছরের নিচের সবাইকে এ স্কিমের আওতায় আনতে হবে। বাজেটে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা এবং একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য পরিবেশ সারচার্জ আরোপের উদ্যোগেরও প্রশংসা করা হয়। সেইসঙ্গে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকা বা না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে গরিব-উপকারভোগীদের সংখ্যা আরও বাড়ানোর দাবি জানানো হয়। সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ সালের বাজেটকে আরও ভোক্তাবান্ধব করেত ৯টি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশগুলো হলো বাজার সিন্ডিকেট মোকাবিলায় কী ভূমিকা নেওয়া হবে, তার কোনো রূপরেখা বাজেট প্রস্তাবনায় নেই। বিষয়টি বাজেট প্রস্তাবনায় সংযোজন করতে হবে। অর্থমন্ত্রী কীভাবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকার পরও আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতাকে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বৈষম্যমূলক বিধান প্রত্যাহার করতে হবে। পড়ালেখার অন্যতম অনুষঙ্গ কলমের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করতে হবে। বাজেটে চলমান ডলার সংকট থেকে উত্তরণের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দিতে হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না রাখার বিষয়টি স্পষ্ট না করা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। তাই বাজেটে বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যয়ের প্রাক্কলন আরও কমিয়ে আনতে হবে।