নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি দখলের হিড়িক পড়েছে। দখলবাজরা রেলওয়ে কলোনির আবাসিক ভবনের বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা রেলওয়ের ভূ-সম্পদ দখল করে নির্মাণ করছে দোকান। অনেক দখলবাজ রেল কোয়ার্টার ভেঙে আরসিসি পিলার দিয়ে নির্মাণ করছে বহুতল ভবন। তাদের হাত থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না রেলওয়ে কলোনির জলাধারগুলোও। অভিযোগ রয়েছে, এসব দখলবাজি চলছে ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে।
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতা পরিচয়ে শহরের অফিসার্স কলোনি এলাকায় (নার্সারি সংলগ্ন) বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা রেলওয়ের আবাসিক ভবনে জায়গা দখল করে দোকানঘর গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ স্থান থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে রেলওয়ের ভূ-সম্পদের ৭ নম্বর কাছারি ঘর ও রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) কাজী ওয়ালি-উল হকের কার্যালয়। এ ছাড়া ওই কর্মকর্তার অফিসের ৩০০ গজ দূরে মুন্সিপাড়া রেল কলোনির ইসলামিয়া স্কুলের পেছনে রেল কোয়ার্টার ভেঙে ওয়াহেদুল হক নামের এক কাগজ ব্যবসায়ী আরসিসি পিলার দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে নির্বিঘ্নে। ওই ব্যবসায়ীর মূল ব্যবসা রেলওয়ের কোয়ার্টার দখল ও তা অন্যের কাছে লাখ লাখ টাকা দামে বিক্রি করা। এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে তিনি এখন কোটিপতি বনে গেছেন। তিনিও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সখ্য ও অসাধু রেল কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বেশ দাপটের সঙ্গে দখলবাজি চালিয়ে আসছেন। শহরের মিস্ত্রিপাড়া রেল কলোনির জলাধার দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছেন পারভেজ, জহির ও রুবেল নামে তিন ব্যক্তি। এমন দখলবাজির ঘটনা প্রতিদিন রেলওয়ের ১৫টি কলোনিতে অহরহ ঘটছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা অভিযোগ পেয়েও অজ্ঞাত কারণে দখলবাজি ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেন না। এমনও ঘটনা রয়েছে, শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ সড়কের পাশের একটি রেল কলোনি দখলে নিয়ে ব্যবসায়ীরা মার্কেট গড়ে তুলেছেন। অচেনা কোনো লোক গিয়ে সহসাই চিহ্নিত করতে পারবেন না যে, সেখানে একটি পুরোদস্তুর রেল কলোনি ছিল।
কথা হয় সাবেক পৌর কাউন্সিলর আকতার হোনে ফেকুর সঙ্গে। তিনি বলেন, সৈয়দপুরে রেলওয়ের জায়গা, কোয়ার্টার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এতে লেনদেন হয় লাখ লাখ টাকা। বিশেষ করে গত ২৪ জুলাই মহামান্য হাইকোর্ট রেলওয়ের দখল হয়ে যাওয়া ভূ-সম্পদের তালিকা করার নির্দেশনা দেওয়ার পর দখলবাজি নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (কারখানা) শরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দখলবাজদের অবৈধ অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হবে।
গণপূর্ত ও ভূ-সম্পদ বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) কাজী ওয়ালী-উল হক বলেন, রেলওয়ে আইনে দখলবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলওয়ে জায়গায় অবৈধ কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন