ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুম নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বিষখালী নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।
এদিকে ভাঙনের মুখে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার তালবাড়ি গ্রামের ৩২টি পরিবার। তাদের মধ্যে রয়েছে জাকির হাওলাদার, আবু তালেব মিয়া, জাহাঙ্গীর হাওলাদার রিপন, রেনু বেগম, রুস্তুম আলী, বাবুল হাওলাদারসহ অন্যান্য পরিবার।
তারা জানায়, বাড়ির ভেতরে বড় আকারের ফাটলের সৃস্টি হয়েছে। নদীতে যে কোনো সময় তাদের বাড়িঘর বিলীন হতে পারে। প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে উপজেলার বুড়ামজুমদার, কাজিরাবাদ ও সড়িষামুড়িসহ তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিষখালী নদীতীরবর্তী সড়িষামুড়ি ইউনিয়নের কালীকাবাড়ি, কালীকাবাড়ি লঞ্চঘাট, আলীয়াবাদ, গাবতলী, ফকিরহাট, বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের তালবাড়ি, বলাইবুনিয়া, বদনীখালী রাজ্জাক মোল্লার বাড়ি থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের আটটি স্থানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ বাঁধ।
উপজেলার সড়িষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শিপন জোমাদ্দার জানান, যেসব স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা দরকার। কারণ জোয়ারের পানিতে ওই বাঁধ আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে। যত দেরি হবে সংস্কার কাজে খরচ তত বাড়বে। তা ছাড়া বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ শেষ করা না হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তালবাড়ির বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৫০) বলেন, আমাদের এখানে স্থায়ী বা টেকসই বাঁধ নির্মাণ দরকার। এখানকার জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখতে হলে মজবুত বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসেম হাওলাদার ও সোহরাব সিকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় শেষ হয়ে গেলে পাউবো বাঁধের ভাঙা স্থান দায়সারাভাবে মেরামত করে। বিষখালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ওই বাঁধ আবার নদীতেই ভেঙে যায়। এ বিষয় বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জেলায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এ বাঁধের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ যাতে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা হয়, সেজন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।