মুরগির ডিমের কথা ভাবলেই গোলগাল সাদা বস্তুর কথা মাথায় আসে। তবে জাপানের টোকিওর পশ্চিমে হাকোনে অঞ্চলের ওয়াকুদানি উপত্যকায় পাওয়া যায় কুচকুচে কালো মুরগির ডিম।
মুরগির ডিমগুলো আসলে কালো নয়। সাধারণ ডিমের মতোই সাদা থাকে। ওই এলাকায় আছে ওয়াকুদানি একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির উপত্যকা। আর তাই সেখানকার পানিতে মিশে আছে বিপুল পরিমাণে গন্ধক ও রাসায়নিক। ওই পানিতে ডিম সিদ্ধ করলেই খোসা হয়ে যায় কুচকুচে কালো। তবে ভেতরের সাদা অংশ এবং হলুদ কুসুমের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে না।
স্থানীয়রা আবার এ ‘কালো ডিম’কে বেশ সমীহ করে। তারা এটাকে বলে ‘কুরো-তামাগো’। তাদের মধ্যে প্রচলিত ধারণাটি হলো, এ ডিমে আয়ু বেড়ে যায় গড়ে ৫ থেকে ৭ বছর। চারটি কুরো-তামাগো অর্থাৎ কালো ডিমের দাম জাপানি মুদ্রায় পড়বে ৫০০ ইয়েন।
প্রায় তিন হাজার বছর আগে মাউন্ট হাকোনের অগ্ন্যুৎপাত শুরু হলেও এর ভেতর থেকে এখনো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। এক হাজার মিটার উঁচুতে অবস্থিত মূল গন্ধক খনিটি দেখতে যেতে পারেন পর্যটকরাও। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা যায় মাউন্ট ফুজি।
কথিত আছে, বিখ্যাত বৌদ্ধ পুরোহিত কুকাই কোবো দাইশি হেইয়ান যুগে (৭৯৪-১১৮৫ খ্রিষ্টাব্দে) ওই অঞ্চলে যান। ওই সময়টা পরিচিত ছিল দাইজিগোক তথা মহা নরকের যুগ হিসেবে। তিনি ওই এলাকার মানুষের দুঃখ দেখে মর্মাহত হয়েছিলেন। তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে নিজের তৈরি বুদ্ধের একটি ছোট মূর্তি নিয়ে প্রার্থনার আয়োজন করেন। ওই সময় আগ্নেয়গিরিটির ফুটন্ত পানিতে ডিম সিদ্ধ করে খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিতও করেন তিনি।