জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ তৈরি করে আইন সংশোধনে উদ্বেগ জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ৫৯তম মানবাধিকার পরিষদে উত্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ উদ্বেগের কথা জানান তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের এক বিবৃতিতে ফলকার টুর্কের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ফলকার টুর্ক বলেছেন, ‘আমি অনুপ্রাণিত বোধ করছি যে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের মাধ্যমে অগ্রগতি অর্জন করছে। সংস্কার, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির লক্ষ্য অর্থবহভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি। অবশ্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ তৈরি করে সম্প্রতি আইনে পরিবর্তন আনা এবং এ-সংক্রান্ত সব কর্মকাণ্ড নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। এটা অন্যায্যভাবে সংগঠনের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সমবেত হওয়ার স্বাধীনতাকে সীমিত করবে।’
এ ছাড়া ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে সংঘাত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাসহ মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা এতে তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার (সংগঠন) যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনও সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার সাম্প্রতিক শুল্ক বৃদ্ধি ও বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের অভিঘাত স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সুনামির গতিতে আঘাত করবে। এর ফলে ক্যারিবিয়ান দেশগুলো এবং উন্নয়নশীল ছোট দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামসহ যেসব দেশের বড় রপ্তানি খাত রয়েছে, সেসব দেশের ওপর এর বিপর্যয় ঘটাতে পারে।
মন্তব্য করুন