সিরিজ বৈঠকের দশম দিনে গতকাল সোমবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল। রাজধানীর গুলশানে ইইউর বাংলাদেশ কার্যালয়ে সকালে সংবাদপত্রের কয়েকজন সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা।
এ বৈঠকে ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ ও প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের সম্পাদক আয়েশা কবীর উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তারা ইইউ প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সবারই উদ্বেগ রয়েছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে সরকারের কাছে উদ্বেগগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বেগগুলো আমলে নিয়ে আইনটির সংশোধন হবে বলে আশা করেন তিনি। তিনি আরও জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গণমাধ্যম ভূমিকা রাখবে বলেও ইইউকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
নূরুল কবীর বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ইইউ প্রতিনিধিদের এখনো বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে, যা দুঃখজনক। তারা অনুরোধ করেছেন ইইউ যেন প্রতিবেদনে এমন কোনো সুপারিশ না করে, যা তাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে।
সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর ইইউ প্রতিনিধিরা কয়েকজন সিনিয়র কূটনৈতিক প্রতিবেদকের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের কাছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নির্বাচনী পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।
বৈঠক প্রসঙ্গে যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম জানান, ইইউ অনুসন্ধানী দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচন কাভার করার ক্ষেত্রে তাদের পেশাগত চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, সাংবাদিকরা তাদের অতীতের নির্বাচন কাভারের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাংবাদিকরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন, তা তুলে ধরেন।
বৈঠকে সাংবাদিকরা জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে ইইউর আলোচনার প্রসঙ্গ টানেন। তারা বলেন, ২০১৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জামায়াতের বিরুদ্ধে একটি রেজ্যুলেশনে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে ‘সম্পর্ক ছিন্ন করার’ আহ্বান জানিয়েছিল এবং বলেছিল, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’-এর সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তবুও কেন ইইউ জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছে? জবাবে ইইউ প্রতিনিধিরা বলেন, তারা এদেশে সব মতের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার স্বার্থে জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এ ছাড়া সাংবাদিকরা ইইউ প্রতিনিধিদলকে আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে উৎসাহিত করে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, তারা ব্রাসেলসে ফিরে গিয়ে তাদের প্রতিবেদন দেবেন।
ইইউর নির্বাচন বিশেষজ্ঞ হিল্লেরি রিকার্ডোর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি স্বাধীন অনুসন্ধানী দল নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে গত ৮ জুলাই থেকে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে।
মন্তব্য করুন