ফয়সল আবদুল্লাহ
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩, ১২:৩২ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

গ্রহটি কেন ধ্বংস হলো না?

লাল দৈত্য হওয়ার পর তারকা যেভাবে গ্রহকে গিলে খায়।
লাল দৈত্য হওয়ার পর তারকা যেভাবে গ্রহকে গিলে খায়।

আমাদের সূর্যের এখন মধ্যবয়স। হলদে ছাপ পড়েছে শরীরে (ইয়েলো ডর্ফ স্টার)। জ্বালানি হাইড্রোজেন যখন ফুরিয়ে যাওয়ার পথে থাকে, তখন দিনে দিনে লাল হতে থাকে সূর্যের মতো অপেক্ষাকৃত কম ভরের তারাগুলো। বড় হতে হতে যখন এটি রেড জায়ান্ট ওরফে লাল দানবে পরিণত হবে তখন শুরু হবে দুটি প্রক্রিয়া।

একদিকে সূর্যের কেন্দ্রটা আকারে ছোট ও উত্তপ্ত হতে থাকবে। অন্যদিকে ক্রমাগত বড় হতে থাকবে বাইরের দিকটা। কতটা বড় হবে? গবেষণায় দেখা গেল এ পর্যায়ে তারকাগুলো তাদের আগের আয়তনের চেয়ে অন্তত একশগুণ তো বড় হবেই। সুতরাং ওই পর্যায়ে সূর্যের ব্যাসার্ধ স্পর্শ করবে মঙ্গল গ্রহকেও। অর্থাৎ, ওই পর্যায়ে বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গলকে টুপটাপ করে গিলে খাবে সূর্যটা।

ঘটবে গ্রহের মৃত্যু; কিন্তু আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ৮-আরসা-মাইনরিস-বি নামের গ্রহটার বেলায় সেটা ঘটেনি। নক্ষত্রের করাল গ্রাস থেকে বেঁচে গেছে ওটা। বিজ্ঞানীরাও খুঁজে পেয়েছেন সম্ভাব্য কারণ।

২০১৫ সালে আবিষ্কার করার পরই বিজ্ঞানীরা মাথা চুলকাতে শুরু করেন গ্রহটার অস্তিত্ব নিয়ে। কারণ, সে যে নক্ষত্রকে ঘিরে ঘুরছে সেটার ভেতর চলছিল হিলিয়াম বার্নিং প্রসেস। মানে ওই তারকা এরই মধ্যে রেড জায়ান্ট দশা পার হয়ে এসেছে। সূত্রমতে, ওই দশায় থাকা অবস্থায় ৮ আরসা মাইনরিসকে গিলে ফেলার কথা তার।

নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট স্পেস টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানী মার্ক হন হিসাব-নিকাশ করে জানালেন, গ্রহটি এক সময় একটি নয় দুটি নক্ষত্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করত। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে বাইনারি সিস্টেম।

তবে নক্ষত্র দুটির বয়স এক ছিল না। একটি তারকা যখন রেড জায়ান্ট দশার দিকে যাচ্ছে, অন্যটি তখন বুড়িয়ে যাওয়া সাদা বামুন (হোয়াইট ডর্ফ)। প্রথম তারাটির হাইড্রোজেন নিঃশ্বেস হয়ে এর কেন্দ্রের হিলিয়াম গোলকটি হয়ে পড়েছিল দারুণ উত্তপ্ত।

একপর্যায়ে ওটা সংকুচিত হতে শুরু করে এবং হাতের কাছে থাকা সেই সাদা বামন নক্ষত্রটিকেও নিজের দিকে টানতে থাকে। লাল দৈত্য যখন সাদা বামনকে গিলতে শুরু করল, তখন ঘটল আরেক ঘটনা। থেমে গেল রেড জায়ান্টের বৃদ্ধি। সাদা বামন তারাটিকে গিলতে গিয়েই যেন লাল নক্ষত্রের খিদে কমে গেল। তাতেই বেঁচে গেল ৮-আরসা-মাইনরিস-বি নামের গ্রহটি। দুটি তারা এক হয়ে যাওয়ার পর এবার নতুন গোলককে ঘিরেই সে ঘুরতে লাগল।

মূলত প্ল্যানেটারি সিস্টেম কীভাবে কাজ করে বা তৈরি হয়, সে-সংক্রান্ত গবেষণায় এ আবিষ্কারটি কাজে আসবে। গ্যালাক্সিতে অনেক বাইনারি সিস্টেম আছে, যাকে কেন্দ্র করে অনেক গ্রহ ঘুরছেও। সেই গ্রহ কী করে তৈরি হলো বা তাদের পরিণতি কী, সেটা জানতেও ৮-আরসা-মাইনরিস একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।

অবশ্য এ তত্ত্বের বাইরেও আরেকটি সরল ব্যাখ্যার সম্ভাব্যতা উড়িয়ে দিচ্ছেন না জ্যোতির্বিদরা। বাইনারি সিস্টেমের দুটি নক্ষত্র যখন এক হয়ে যায়, তখন একটা সাংঘর্ষিক দশাও তৈরি হয়। আর এমন মহাজাগতিক সংঘর্ষের পরও তৈরি হতে পারে আস্ত একটা গ্রহ। ঠিক যেভাবে আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে অতিকায় আরেক গ্রহের (যার নাম থিয়া) সংঘর্ষে চাঁদ তৈরি হয়েছিল বলে জোর বিশ্বাস গবেষকদের।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

৬ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শনিবার

নতুন প্রজন্ম শান্তিপূর্ণ রাজনীতি প্রত্যাশা করে : ইশরাক

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ

‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের আপনজন’

২০ বছরের ব্যবসা বাঁচাতে ছাড়লেন চেয়ারম্যান পদ

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

১০

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

১১

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

১২

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

১৩

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

১৪

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

১৫

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

১৬

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১৭

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১৮

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১৯

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

২০
X